প্রতিরক্ষার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নেও যেন সশস্ত্র বাহিনী অবদান রেখে চলে, সেই প্রত্যাশা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২১-এ ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে নিজের প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, সমপ্রসারণ ও উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি। আমরা যুগোপযোগী প্রতিরক্ষা নীতিমালা ২০১৮ প্রণয়ন করেছি। গত ১৩ বছরে আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছি। খবর বিডিনিউজের।
সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র, বিমান ও হেলিকপ্টার সংযোজন, নৌবাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক করভেট, ফ্রিগেট, সাবমেরিন ও মেরিটাইম হেলিকপ্টার কেনা, বিমান বাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সংযোজনের কথা বলেন তিনি। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যু হলে পরিবারের সদস্যদের জন্য ফ্ল্যাট বা গৃহ নির্মাণের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান, জেসিও এবং অন্যান্য পদবির সদস্যদের মৃত্যু বা স্থায়ী অক্ষম হওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ বাবদ অনুদানের পরিমাণ বাড়ানোর কথাও বলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ মিশনে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রদানকারী দেশ হিসেবে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথাও তিনি বলেন। করোনা মহামারী, দুর্যোগ মোকাবেলার পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার কথাও বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী এক্সেস কন্ট্রোল এক্সপ্রেসওয়ে, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিল, ফ্লাইওভার এবং সীমান্ত সড়ক নির্মাণে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। আমাদের নৌবাহিনী ভাসানচরে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগারিকদের জন্য আবাসন এবং অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছে।
বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখে দেশের গৌরব সমুন্নত রাখতে পারেন, আমি সেটাই কামনা করি।
এ অর্জন ব্যর্থ হতে পারে না : এদেশের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ‘ব্যর্থ হতে পারে না’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের বুকে মর্যাদা নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে গতকাল খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা এবং সশস্ত্র বাহিনীর শান্তিকালীন পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেঙে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পাঁচজন সেনা, দুজন নৌ এবং একজন বিমান বাহিনী সদস্যকে ২০২০-২১ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করেন।