খুলশীতে কথা কাটাকাটির জেরে হানিফ খুন, প্রধান আসামিসহ চারজন গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২১ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

সিএনজি টেক্সির ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে খুন হয় মো. হানিফ। আহত হয় তার বড় ভাই মো. অনিক। হত্যা মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এমন তথ্য জানায় র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো আমির হোসেন ওরফে আমির ডাকাত, তার ছেলে সোহেল ওরফে ভান্ডারী, হাসান ও সোহাগ। এর আগে হত্যাকাণ্ডের পর পর পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।
জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর অভিযুক্ত সোহেল প্রকাশ ভান্ডারী স্থানীয় একটি সিএনজি টেক্সি ভাড়া করে যাওয়ার পথে অনিকের সাথে দেখা হয়। এসময় অনিক ঠাট্টার ছলে সিএনজি টেক্সি চালককে বলে ভান্ডারী থেকে যেন ভাড়া বেশি নেয়। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এর মধ্যে হাজির হয় হানিফ। সে তার বড় ভাইয়ের সাথে তর্ক করছে দেখে সোহেলকে চড় মারে। সোহেল চলে যায়। তার বাবা আমির ওরফে আমির ডাকাত এসময় গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। তিনি এসে বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষেপে যান। চড় খেয়েও চলে আসায় ছেলে সোহেলকে বকাঝকা করেন। তারই সূত্র ধরে গত ৮ নভেম্বর বিকেলে খুলশী থানার আমবাগান শহীদ মিনার সংলগ্ন তরুণ সংঘের মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে মো. হানিফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় হানিফের ভাই জয়নাল আবেদিন বাদী হয়ে খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনাটি চট্টগ্রাম জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলে ছায়া-তদন্ত শুরু করে র‌্যাব।
র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা প্রথমে নগরীর কর্নেলহাট এলাকায় এক স্বজনের বাসায় আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে সোহেল ও হাসান শরীয়তপুরের নড়িয়ায় এক মামার বাড়িতে চলে যায়। আমির হোসেন ও সোহাগ যায় কেরানীগঞ্জে। গত শনিবার বিকেলে প্রথমে সোহেল ও হাসানকে শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর আমির হোসেন ও সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয় কেরানীগঞ্জ থেকে। র‌্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ বলেন, গ্রেপ্তার আমির হোসেনের বাড়ি শরীয়তপুরে হলেও তিনি ছোট থেকেই আমবাগান এলাকায় থাকেন। তিনি ‘আমির ডাকাত’ নামেও পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্রসহ তিনটি মামলা আছে। আমির তার চার ছেলের মধ্যে তিনজনকে ‘কিশোর গ্রুপে’ সম্পৃক্ত করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতেন। তিনি বলেন, নিহত হানিফ ও তার ভাই আহত অনিকও আলাদা একটি কিশোর গ্রুপের সদস্য। তারা রেলের বিভিন্ন স্থাপনা অবৈধ দখলে রেখেছে। সেগুলো নিয়ে সোহেলদের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব ছিল। আমির আমবাগান এলাকায় স্থানীয় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন, যেটা মেনে নিতে পারেনি হানিফ ও অনিক। সেটা নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। ঘটনার দিন আমির ও তার ছেলে সোহেল দলবল নিয়ে খেলার মাঠে যায়। সেখানে হানিফদের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় সোহেল একটি ছোট ছুরি দিয়ে হানিফকে বুকে এবং অনিককে পায়ে আঘাত করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে হানিফ মারা যায়। আহত অবস্থায় তার ভাই অনিক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইকুইটি মিডসিটির মেলায় ব্যাপক সাড়া
পরবর্তী নিবন্ধআবেদনের জন্য সফটওয়্যার বানাচ্ছে চুয়েট