জাটকা বা বাচ্চা ইলিশকে বড় হবার সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারের নির্দেশে বাংলাদেশে পয়লা নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে জাটকা বা বাচ্চা ইলিশের মাপ যদি ১০ ইঞ্চির নিচে হয়, তাহলে সে জাটকা ধরার জন্য দণ্ডিত হবেন জেলে। বিক্রয়-বিপণন ও সংরক্ষণের জন্য সাজা পাবেন আড়তদার এবং ব্যবসায়ী। এর আগে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। তার আগে পয়লা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুইমাস ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।
বাংলাদেশের মৎস্য আইন অনুযায়ী জাটকা নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ, কিন্তু সময় বেধে দিয়ে জাটকার আকৃতিতে পরিবর্তন এনে নিষেধাজ্ঞা এবারই প্রথম দেয়া হলো।
বাংলাদেশের মৎস্য আইন অনুযায়ী, এতদিন জাটকার আকার ছিল নয় ইঞ্চি। কিন্তু সম্প্রতি সে আকার এক ইঞ্চি বাড়ানো হয়েছে। এখন জাটকা বলতে বোঝানো হবে ১০ ইঞ্চি মাপের বাচ্চা ইলিশ। এই ইলিশকে পূর্ণ বয়স্ক ইলিশে পরিণত হবার সুযোগ দেয়ার জন্য সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, মুখ থেকে লেজ পর্যন্ত ইলিশের এই মাপ হিসাব করা হয়। সাধারণত ১০ ইঞ্চি আকারের একটি ইলিশের বয়স ধারণা করা হয় ৮-৯ মাস। কিন্তু পূর্ণবয়স্ক ইলিশে পরিণত না হলে সে মাছ প্রজনন প্রক্রিয়া শুরু করবে না, অর্থাৎ ডিম ছাড়া ও বাচ্চা ফোটানোর জন্য ইলিশের একটি নির্দিষ্ট বয়স লাগে। একটি ইলিশের পূর্ণবয়স্ক হবার জন্য এক বছরের বেশি সময় লাগে।
গত কয়েক বছর ধরে মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকারি বিধিনিষেধের ফলে ইলিশের উৎপাদন অনেকগুণ বেড়েছে বলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩-২০০৪ সাল থেকেই জাটকা রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই আস্তে আস্তে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে বলে মনে করেন গবেষকেরা।
নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ১০ ইঞ্চির ছোট সকল জাটকা ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, বিনিময় ও মজুত আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ সময় নদীতে ব্যবহারের জন্য জেলেদের জালের ব্যাস বা ফাঁসের গিঁঠের দূরত্ব সাড়ে পাঁচ সেন্টিমিটারের চাইতে কম হলে জেল-জরিমানার বিধান আছে আইনে। এ সময়ে নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হবে। বাংলাদেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে।