বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩টার দিকে খুন হওয়া মোস্তফা সওদাগর, তার স্ত্রী জোসনা আরা ও মেঝ ছেলে আহমদ হোসেনকে খুনের কথা স্বীকার করেছে মোস্তফার বড় ছেলে সাদেক হোসেন। গতকাল শুক্রবার আদালতে বাবা-মা ও ভাইকে নিজেই খুন করার স্বীকারোক্তি দেয় সাদেক নিজে। জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাদেক খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তিতে সাদেক জানায়, তার স্ত্রী আইনুন নাহারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বাবা-মার ঝগড়া, আপন শালী তথা ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ঘরে না তোলা এবং মেঝ ভাইকে ৪ শতাংশ জমি লিখে দেয়ার কারণে বাবা-মা ও ভাইয়ের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় সাদেক। গত ১৫ দিন আগে সে তাদের খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গত বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের বায়েজিদ এলাকা থেকে একটি স্টিলের ছুরি কেনে। বিকেলে বাড়িতে এসে ঘরে সেটি লুকিয়ে রাখে। প্রায় সারারাত জেগে থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৩টার দিকে প্রথমে বাবা-মায়ের কক্ষে গিয়ে ঘুমন্ত বাবা মোস্তফার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এসময় মা জোসনা আরা জাগ্রত হলে তাকেও একই কায়দায় ছুরিকাঘাত করে। পরে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের করিডরে চলে আসে। এসময় পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা ছোট ভাই আহমদ বাবা-মায়ের চিৎকার শুনে পড়িমরি করে এগিয়ে এলে তার গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় সাদেক। পরে তিনজনের শরীরে উপর্যুপরি ছুরি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার পরপর সে ছুরিটাকে ঘরের পশ্চিম পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ছাদে উঠে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকে। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন বাড়ির মূল ফটকসহ সব বন্ধ। পরে সাদেক নিজেই তালা খুলে দিলে প্রতিবেশীরা বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা খুনের ঘটনা দেখে পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ জানায়, সুরতাহালে দেখা যায় বাবা ও ভাইয়ের শরীরে ২২টি করে এবং মায়ের শরীরে ২৩টি ছুরির ছোট-বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন বলেন, উক্ত ঘটনায় নিহত মোস্তফার একমাত্র কন্যা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন। মামলার বাদী বলেন, বাবা-মার হত্যাকারী আপন ভাই হলেও তিনি তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত বিচার চান।