কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর আবারও বাড়ছে বিদেশী ফলের বাজার। বিশেষ করে আপেল-মাল্টার দাম গত এক সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া আপেল-মাল্টার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে কমলা-আঙুরের দামও। ফলমন্ডির ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে লোকসান দিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব ফল আসছে সেগুলোর মানও ভালো নয়। এক কার্টনে দেখা যাচ্ছে ২-৩ কেজি পর্যন্ত পচা পড়ছে। তাই ফলের দামের ওপর প্রভাব পড়ছে। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ী লোকসান দেয়ার কারণে নতুন করে আর এলসি (ঋণপত্র) খুলেননি।
গতকাল নগরীর ফলমন্ডিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে এখন চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার আপেল রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আপেলের মান চীনের আপেলের থেকে কিছুটা ভালো। প্রতি কার্টনে ১৮-২০ কেজি পর্যন্ত আপেল থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার আপেল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া চীনের আপেল বিক্রি হচ্ছে কার্টন প্রতি ১ হাজার ৭০০ টাকায়। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কার্টনে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একইভাবে বেড়েছে মাল্টার দাম। তবে আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাল্টার চাষ হচ্ছে। সেসব স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রবেশও করেছে। সে কারণে মাল্টার বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে বলছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে প্রতি কার্টন (১৮ কেজি) মাল্টা হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। কার্টনে বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ৭-৮ কেজি ওজনের প্রতি কার্টন আঙুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। দাম বেশি না বাড়লেও পঁচা আঙুর আসায় আমদানি ব্যয়ের ওপর প্রভাব পড়ছে। প্রতি কার্টনে এক কেজি পর্যন্ত আঙুর পঁচা পাওয়া যাচ্ছে বলছেন ফলমন্ডির আড়তদাররা।
ফলমন্ডির ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের দেশে মৌসুমভেদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আপেল-মাল্টার মতো বিদেশী ফল আমদানি হয়ে থাকে। বর্তমানে আপেল আসছে চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। এছাড়া মাল্টা-কমলা আসছে ভারত ও চীন থেকে। আগামী কিছুদিন পর অস্ট্রেলিয়া থেকেও আসবে মাল্টা-কমলার চালান।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ফলমন্ডি ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুছ দৈনিক আজাদীকে বলেন, করোনাকালীন ফল আমদানিকারকরা প্রচুর টাকা লোকসান গুনেছেন। এছাড়া এরমধ্যে কন্টেনার ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বন্দরের ডেমারেজ তো আছেই। কন্টেনারে অনেক ফল পঁচেও যাচ্ছে। আমাদের পাইকারিতে ফলের বাজার এখনো সহনশীল মাত্রায় রয়েছে। সমস্যাটা হয় খুচরা বাজারে। খুচরা বাজারে একেক দোকানে একেক দরে ফল বিক্রি করে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে-ফল আমদানিতে ৯০ শতাংশ মতো শুল্ক দিতে হয়। শুল্ক কম হলে তো দাম আরো কমে যেতো।