তিন যুবক নিখোঁজ এক মাস ধরে

আইআইইউসি শিক্ষার্থীর সন্ধান চায় পরিবার।। মামলা নিতে পুলিশের অনীহার অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৭:০০ পূর্বাহ্ণ

খামারের জমি দেখতে গিয়ে কক্সবাজারের রামু এলাকা থেকে নিখোঁজ তিন যুবকের সন্ধান গত এক মাসেও মেলেনি। তম্মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারা এলাকার রিদুয়ানুল হকের (২৩) সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সন্তানের সন্ধান চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন রিদুয়ানুল হকের মা শামীমা আকতার। রিদুয়ানুল আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) এলএলবি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভিকটিমের মামা মোহাম্মদ ইউনুছ। নিখোঁজের এক মাস পার হলেও সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা খুবই উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। এ ঘটনায় রামু থানায় সাধারণ ডায়েরি হলেও মামলা নিতে পুলিশের অনীহার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রিদুয়ানুলের বাবা প্রবাসী। রিদুয়ান নগরীর সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে আইআইইউসিতে আইনে পড়ালেখা করছিল। করোনাকালীন বিদেশে বাবার আয় রোজগার কমে যাওয়ায় পরিবারের হাল ধরার জন্য লালখান বাজার আমিন সেন্টারে শেয়ারে একটি দোকান নেয়। ওই দোকানে মধু সরবরাহ করার সুবাদে বন্ধুত্ব হয় ঢাকার মাওলানা রফিকুল ইসলাম খালেদ ও আবু বক্করের সাথে। বান্দরবান থানার নাইক্ষ্যংছড়ি কম্বনিয়া এলাকায় রফিকুল ইসলামের খামার ও পেঁপে বাগান আছে। ওই বাগানের পাশে একটি ছাগলের খামার করার জায়গা দেখার জন্য গত ২৪ আগস্ট দুই বন্ধুর সাথে নাইক্ষ্যংছড়ি যায় রিদুয়ান। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে খামারে না পৌঁছায় এবং তাদের মোবাইল বন্ধ পেয়ে খামারের কেয়ারটেকার আবদুল আওয়াল বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানান। এরপর পরিবারের লোকজন নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় যোগাযোগ করলে রিদুয়ানের মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করে রামু থানাধীন গর্জনিয়া মাঝিরকাটা এলাকা তাদের সর্বশেষ অবস্থান চিহ্নিত করে পুলিশ। এরপর ২৯ আগস্ট রামু থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ভিকটিমের পরিবার।
রিদুয়ানের মামা মো. ইউনুছ জানান, ২৫ আগস্ট রামু থানায় গেলেও প্রথমে জিডিও নিতে চায়নি পুলিশ। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করার পর ২৯ আগস্ট জিডি নেয় রামু থানা পুলিশ। কিন্তু এখন প্রায় এক মাস পার হলেও কোনো মামলা হয়নি। আমার ভাগিনাও উদ্ধার হয়নি। সে কোথায় আছে, কেমন আছে, সেটাও জানি না। তিনি বলেন, ‘আমার ভাগিনা ও তার দুইবন্ধ একসাথে নিখোঁজ হয়েছে। তারা কেন অপহৃত হয়েছে বা নিখোঁজ, সে বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। আমরা প্রতিদিন পুলিশের সাথে যোগাযোগ করছি, তারা কোনো তথ্য দিতে পারছে না। সংবাদ সম্মেলনে রিদুয়ানের মা শামীমা আকতার বলেন, ‘আমি আমার সন্তানের হদিস চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামু থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘তিন যুবক নিখোঁজের ঘটনায় আমরা জিডি নিয়েছি এবং তদন্ত চলছে। তাদের উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।’ মামলা নিতে অনীহার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত তারা উদ্ধার হলে জিডিকে মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। তিন যুবক কেন অপহরণ কিংবা নিখোঁজ সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলেও জানান ওসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাইড শেয়ার চালকদের ধর্মঘট আজ
পরবর্তী নিবন্ধহাসপাতালটিই শুধু আছে আর কিছু নেই