আবার ফিরে আসি পত্র লেখায়

নজরুল জাহান | বৃহস্পতিবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

আর কি হবে লেখা? দু’এক ছত্র। পত্র তো গেছে মুছে। এই ধরো বাজার-সাজারের তালিকা। হলুদ পেঁয়াজ মরিচ রসুন ইত্যাদি। দুর্মূল্যের কিছু অনাসৃষ্টির পত্রগল্প। রহস্যে ঘেরা যে কথাগুলো বলা না বলা, তার দেখা হলো কি হলো না! যেমন টাকে পড়া মাথার তালু। সে একটু খালি জায়গা। দু’একটা বৃক্ষ রোপন। চুলের পরিবর্তে লতা গুল্মের গাছ তো হতে পারে? তবু মনের বেদনার কথা বলা যায় পড়া যায়। তারপরও দু’এক কথা বলতে বলতে আবার পত্র লেখায় ফিরে আসতে পারি। আবার শুরু করতে পারি। চিরকুট লিখে ছলা কলা করে সেই তার মতো দৃষ্টিগোচরে নেয়া। আর নিঝুম হয়ে চিরকুটের জবাবের অপেক্ষায় থাকা। এভাবে আর কতো কাল পত্র অবহেলিত থাকবো? আর পত্রবঞ্চিত থাকবো! আমাদের এই মনের ভাষার পত্র! কতো কাল ধরে হাতে তুলি না। হাতে তুলতে পাই না। সেই প্রিয় পত্রের মুখ খুব সহজেই কি খুলে ফেলতাম? ডাক পিয়ন হাতে দেওয়া মাত্রই লুকিয়ে ফেলতাম। নিয়ে ছুটতাম নির্জন কোথাও! বাড়ির বড় পুকুরের উত্তর দক্ষিণের কোনো কোণটাতে বসে পড়তাম। তারপর আস্তে ধীরে করে পত্রটি বের করতাম। তবু তার আগে কতোক্ষণ যে পত্রটি অবমুক্ত না করে শুধু তাকিয়েই থাকতাম, যেমন তাকিয়েই থাকতাম সেই প্রিয় মুখটির দিকে। তারপর অবশ্য একসময় খামের ভেতর থেকে মুক্ত হতো পত্রটি। যেন স্বর্ণ কিংবা হীরকখচিত কিছু। যেন হাজার বার রসিয়ে রসিয়ে পাঠ আর দেখার কিছু। এ রকম কতো পত্র। মা জননীর পত্র, প্রিয় বাবার পত্র। এ পত্র লেখা পুনরায় শুরু করতে চাই। আসুন আমরা আবার পত্র লেখা শুরু করি। প্রিয়জনকে পত্র লিখি, বাবাকে, মাকে পত্র লিখি। আর যান্ত্রিক নয়, যান্ত্রিকতা নয়। মনের ভাষায় আবার রচনা করি পত্র। লেনদেন করি পত্র। অপেক্ষা করি প্রিয়জনের পত্রের। এই পত্রের জন্য কতো ক্ষুধা আমাদের! কতো তৃষ্ণা আমাদের ছিল! আমরা আবার ফিরে আসি পত্রে। আবার জড়িয়ে রাখি নিজেদের স্নেহের, ভালোবাসার পত্রে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক আজাদীর প্রতি অভিনন্দন