টেকনাফের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের স্ত্রী আমেনা খাতুনের ৩১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রামের একটি আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে এ সম্পদ থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। গত ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হয়। অভিযোগপত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগপত্রে ৮ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়। অভিযোগপত্রে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, একটি অভিযোগ অনুসন্ধানে কঙবাজারের টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যানসহ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে ২০১৭ সালের ৯ জুলাই আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে এক দফা সময় বাড়িয়ে ওই বছরের ৩০ জুলাই তিনি দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন। সম্পদ বিবরণীতে তিনি কোন স্থাবর সম্পদ প্রদর্শন করেননি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ নামে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ২৯৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে ৩০ লক্ষ ৩ হাজার ৩২ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য প্রমাণ পান দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা। পরবর্তীতে ২৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৩৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার বিষয় প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল নগরীর ডবলমুরিং থানায় মামলা করে দুদক। মামলার তদন্ত শেষে আমেনা খাতুনের মোট সম্পদ ও খরচ মিলে ৪৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩২ টাকার তথ্য পান। এতে গ্রহণযোগ্য আয় রয়েছে ১৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩২ টাকা। এতে ৩১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, টেকনাফের উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদার। ইয়াবা কারবারীর তালিকায় তার তিন ছেলে সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া, দিদার মিয়া ও ইলিয়াছের নাম রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা কারবারীর মধ্যে জাফর আহমদের ছেলে দিদার মিয়াও আত্মসমর্পণ করেন।