ক্ষেত নষ্ট করার অপরাধে লাখ টাকা দামের একটি গরুকে (ষাঁড়) পিটিয়ে মারলো ক্ষেতের মালিক। সোমবার সন্ধ্যায় অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটে চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার হাতিয়াখোলা এলাকায়।
পবিত্র ঈদুল আজহায় বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশায় গরুটি বর্গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লালন পালন করে আসছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বাদশা মিয়া। গরুটি হারিয়ে তিনি এখন পুরোপুরি নির্বাক। এ ব্যাপারে তিনি ঘটনার দিন রাতেই চন্দনাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার হাতিয়াখোলা গ্রামের মৃত ফজল করিমের পুত্র বাদশা মিয়া (৬০) বিগত দেড় বছর আগে একই এলাকার শাহজাহান নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি বাচুর বর্গা নিয়ে লালন পালন করছিলেন।
গত সোমবার বিকেলে তিনি তার পালিত গরুটি ঘাস খাওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী জমিতে বেঁধে দিয়ে আসেন। কিন্তু বিকেলের দিকে তিনি খবর পান বরবটি ক্ষেত নষ্ট করার অপরাধে রায়জোয়ারা এলাকার মৃত ছগির আহমদের পুত্র আব্দুল মান্নান (৫০) গরুটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। খবর পেয়ে বাদশা মিয়ার ১০ বছর বয়সী পুত্র জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে গরুটি মরা অবস্থায় দেখতে পায়। এবং স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারে আবদুল মান্নান গরুটিকে পিটিয়ে মেরেছে।
গরুর পালিত মালিক বাদশা মিয়া জানান, পবিত্র ঈদুল আজহায় বিক্রির উদ্দেশ্যে তিনি দীর্ঘদিন গরুটি লালন পালন করে আসছিলেন। ইতিমধ্যে তার গরুটির দাম ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। কিন্তু গরুটি বিক্রির আগেই পিটিয়ে অমানবিকভাবে হত্যা করে আবদুল মান্নান। তিনি তার গরু হত্যার উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করেন।
গরুর প্রকৃত মালিক মো. শাহজাহান জানান, গরুটি গত রবিবার বাদশা মিয়ার কাছ থেকে এক ক্রেতা ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত চেয়েছেন। কিন্তু উঠতি গরু হওয়ায় আমি বাদশা মিয়াকে পরামর্শ দিই এ বছর গরুটি বিক্রি না করে আগামী কোরবানিতে বিক্রি করতে। তখন আরো ভাল দামে বিক্রি করা যাবে। তাই সে গরুটি বিক্রি করেনি। ক্ষেত নষ্ট করার অযুহাত দেখিয়ে এভাবে একটি বোবা প্রাণীকে অমানবিকভাবে পিটিয়ে হত্যা করা সত্যিই দু:খজনক।
তিনি আরো বলেন, অভিযুক্ত আবদুল মান্নান দোহাজারী তদন্ত কেন্দ্রে বৈঠকে আসার কথা বলেও আসেনি। এখন তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তিনি গরু হত্যাকারী আবদুল মান্নানের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নানের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার মোবাইল ফোনে করা হলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। পিটিয়ে গরু মেরে ফেলার ব্যাপারে বাদশা মিয়া বাদি হয়ে চন্দনাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান চন্দনাইশ থানায় ডিউটিরত অফিসার সাব ইন্সপেক্টর মল্লিকা রায়।