ভ্যাট ফাঁকি রোধে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অধীনে ৮ বিভাগের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসানো হচ্ছে আরো ৫০০টি ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন। এর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে দুই দফায় মোট ৫২০টি ইএফডি মেশিন বসানো হয়। ভ্যাট কর্মকর্তারা জানান, ইএফডি মেশিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় সার্ভারের সাথে সংযুক্ত থাকার ফলে ক্রেতা মূল্য পরিশোধের সময় সাথে সাথে আরোপিত ভ্যাট আলাদা হয়ে যাবে। এছাড়া কেনাকাটার সময় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভ্যাট আদায়ের ফলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলেও কর্মকর্তারা জানান।
ভ্যাট কর্মকর্তারা বলছেন, ইএফডি এবং এসিডিসি মেশিন স্থাপনের ফলে এখন থেকে আর কোনো প্রতিষ্ঠানে ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) মেশিন থাকবে না। তবে ইসিআর মেশিন না থাকলেও পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) সিস্টেমও রাখতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। সেক্ষেত্রে পিওএস মেশিনটিও ইএফডি’র সাথে সংযুক্ত থাকবে। ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যখনই ভ্যাট দিই, আমাদের সন্দেহ করা হয়। বলা হয়, আমরা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছি। এই মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা হয়ে যাবে, এতে সন্দেহ দূর হবে। তবে সবাইকে ইএফডি মেশিনের আওতায় আনতে হবে। একটি শপিং সেন্টারের অর্ধেক দোকানে যদি মেশিন দেয়া হয় বাকি দোকানে যদি মেশিন দেয়া না হয় তবে গ্রাহকরা স্বাভাবিকভাবে যে দোকানে ইএফডি মেশিন নাই সেখানেই যাবে।
জানতে চট্টগ্রাম কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপ-কমিশনার মো. আহসান উল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা জরিপ চালিয়ে আরো ৫০০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চাহিদাপত্র দিয়েছি। মেশিন আসলে স্থাপনের কাজ শুরু করে দেবো। পাশাপাশি ইএফডি মেশিনকে জনপ্রিয় করে তুলতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতি মাসের ৫ তারিখে এনবিআর চার ক্যাটগরিতে লটারির মাধ্যমে ১০১টি পুরস্কার ঘোষণা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে। ক্রেতারা পণ্য কিনে যেন ভ্যাট চালানটি বুঝে নেন।
জানা গেছে, গত বছরের ২৫ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ইএফডি বসানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, ইএফডি মেশিন বাধ্যতামূলক এমন ২৫ ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ফাস্ট ফুডের দোকান, ডেকোরেটার্স ও ক্যাটারার্স, মোটরগাড়ির গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ ও ডকইয়ার্ড, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, ছাপাখানা ও বাঁধাই সংস্থা, সামাজিক ও খেলাধূলাবিষয়ক ক্লাব, তৈরি পোশাকের দোকান, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালি সামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র, শপিং সেন্টার ও শপিং মলের সব সেবা প্রদানকারী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর ও সুপারশপ, বড় ও মাঝারি ব্যবসা (পাইকারি ও খুচরা) প্রতিষ্ঠান, যান্ত্রিক লন্ড্রি, সিনেমা হল এবং সিকিউরিটি সেবা, কমিউনিটি সেন্টার, মিষ্টান্ন ভান্ডার; স্বর্ণকার ও রৌপ্যকার এবং সোনা-রুপার দোকানদার এবং স্বর্ণ পাইকারি, আসবাব বিক্রয়কেন্দ্র, কুরিয়ার ও এঙপ্রেস মেইল সার্ভিস, বিউটি পার্লার, হেলথ ক্লাব ও ফিটনেস সেন্টার এবং কোচিং সেন্টার।












