করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন এক নারীর মৃত্যুর পর তার স্বজনরা পালিয়ে গেছেন। ওই নারীর পরিবারের কাউকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশের বিশেষ শাখায় খবর দিলে তারা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী টিমের মাধ্যমে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ওই নারীর নাম আসমা আকতার। ৩৮ বছর বয়সী ওই নারী নগরের আগ্রাবাদ মৌলভীপাড়া এলাকার মোজাম্মেল হকের স্ত্রী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মারা যান তিনি।
হাসপাতাল সংশ্ল্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর করোনা পরিস্থিতির প্রথম দিকে এ ধরণের বেশ কয়টি ঘটনা ঘটে। তবে এই সময়ে এসে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য জটিলতা নিয়ে আসমা আকতারকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। ওই সময় র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে আসমার করোনা পজিটিভ আসে। পরে তাকে করোনা ইউনিটের রেড জোনে ভর্তি দেয়া হয়।
ভর্তির পর থেকে ওই নারীর পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজ-খবর রাখছিল। বুধবার রাতে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনদের খোঁজ করে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে রাত ১টার দিকে ওই নারীর মৃত্যু হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতালের করোনা ম্যানেজমেন্ট টিমের কোর কমিটির সদস্য প্রফেসর ডা. আব্দুর সাত্তার বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগীর ছেলে-মেয়ে তার খোঁজ-খবর রাখছিল। কিন্তু মৃত্যুর পর তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। স্বজনদের না পাওয়ায় হাসপাতাল থেকে নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় (সিটিএসবি) খবর দেয়া হয়।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভুইয়া জানান, চিকিৎসক ও সংশ্ল্লিষ্ট লোকজন ওই রোগীর স্বামী ও স্বজনদের না পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে ওই রোগীর স্বামী মোজাম্মেলের নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লেখা ছিল। কিন্তু মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেও তাদের কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি। পরে ওই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন লাশটি দাফনের দায়িত্ব নেয়। এদিকে, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে লেখা ওই রোগীর ঠিকানায় গিয়ে বাসা তালাবদ্ধ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন।
ওসি বলেন, আগ্রাবাদ মৌলভীপাড়া এলাকার দেয়া ঠিকানায় গিয়ে আমরা খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু বাসাটি তালাবদ্ধ। ওই নারীর স্বামী মোজাম্মেল পেশায় রাজমিস্ত্রি। একমাস আগে ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। গার্মেন্টসকর্মী স্ত্রী আসমাকে নিয়ে সেখানে থাকতেন। বাসা তালাবদ্ধ এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় স্বামী মোজাম্মেলের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেও জানান ওসি মহসীন।