এবার দ্বিতীয় ডোজের জন্য সংরক্ষিত রেখেই টিকাদান

চট্টগ্রামে চীনা টিকা পাচ্ছেন ৪৫ হাজার ৬শ জন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২১ জুন, ২০২১ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

সিনোফার্মের তৈরি চীনা টিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে গত শনিবার থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা অন্যদের টিকাদান শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় এ কার্যক্রম চলছে। চমেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হচ্ছে কার্যক্রম। চট্টগ্রামে কেবল চমেক হাসপাতাল কেন্দ্রেই টিকাদান কার্যক্রম চলছে।
২য় ডোজের জন্য সংরক্ষিত রেখেই টিকাদান : এবার মোট প্রাপ্ত টিকার অর্ধেক সংখ্যক মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে। বাকি অর্ধেক টিকা দ্বিতীয় ডোজের জন্য সংরক্ষিত রাখা হচ্ছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজাদীকে বলেন, সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। তাই প্রথম ডোজ গ্রহীতা সকলেই যেন ২য় ডোজ পান, সে জন্য অর্ধেক টিকা সংরক্ষণে রেখে বাকি অর্ধেক টিকা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার সিনোফার্মের তৈরি ৯১ হাজার ২০০ ডোজ চীনা টিকা পেয়েছে চট্টগ্রাম। সে হিসেবে চট্টগ্রামে এবার সব মিলিয়ে চীনা টিকা পাচ্ছেন ৪৫ হাজার ৬০০ জন।
এদিকে, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ও বিডিএস অধ্যয়নরত ৩ হাজার ৮২০ জন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণে তালিকাভুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, সিডিউল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে সময়সীমা বাড়াতেও পারে। প্রথম দিন ১৯৬ জনের পর গতকাল দ্বিতীয় দিন ২৯৮ জন শিক্ষার্থী করোনার টিকা নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, মেডিকেল শিক্ষার্থীর বাইরে চিকিৎসক-নার্সসহ অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা অন্যদের টিকাদানও শুরু হয়েছে। চমেকের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় দুটি বুথে এ কার্যক্রম চলছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর আজাদীকে বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীর বাইরে অগ্রাধিকার তালিকায় যারা আছেন আমরা তাদেরও টিকা দেওয়া শুরু করেছি। এছাড়া যারা চমেক হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা নিতে আগে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন, কিন্তু টিকা নিতে পারেননি; তারাও এবার টিকা পাবেন। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কার্ডটি সাথে নিয়ে এলেই তারা টিকা নিতে পারবেন।
অগ্রাধিকার তালিকায় যারা : সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং কলেজ, আইএইচটি ও ম্যাটস-এর শিক্ষার্থীরা এ টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এবার অগ্রাধিকার তালিকায় থাকছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কেবল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের এ টিকা দেওয়া হবে।
এছাড়া করোনায় সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্য থেকে নিবন্ধন করেও কেউ যদি টিকা না পেয়ে থাকেন, তবে তারাও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ টিকার প্রথম ডোজ পাবেন। এর বাইরে যে কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকাদান চলবে, ওই কেন্দ্রে টিকা গ্রহণের জন্য পূর্বে অনলাইনে নিবন্ধনকারীরাও এ টিকা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বড় প্রকল্পে কর্মরতদের পাশাপাশি মৃতদের দেহ সৎকারে নিয়োজিত কর্মী, চীনা নাগরিক এবং বিদেশগামী কর্মীদেরও এ টিকার অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে দুই দফায় ৮ লাখ ডোজের সামান্য বেশি টিকা পায় (অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকা) চট্টগ্রাম। প্রথম ডোজ নেওয়া আরো প্রায় লক্ষাধিক টিকা গ্রহীতা দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন। প্রথম ডোজ গ্রহণের পর অনেকের সময়ের ব্যবধান তিন মাস পার হতে চলেছে। অনেকের আরো বেশি। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ পাবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনেতাকর্মীর সাথে এমপিদের মিলেমিশে কাজ করার তাগিদ
পরবর্তী নিবন্ধতিন কিমি রাস্তায় যত টেনশন