প্রায় ২০ বছর পর চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা। আগামীকাল ভার্চুয়ালি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের একদিন পরই কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হবে ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ১০১ সদস্যের মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা-তদবিরে ব্যস্ত ১ হাজারেরও বেশি প্রার্থী। নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদের জন্য আগ্রাহী প্রার্থীরা গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ঢাকায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ এবং কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ. কে. এম আফজালুর রহমান বাবুর সাথে দেখা-সাক্ষাত করে আসছেন। নিজের বায়োডাটা জমা দিচ্ছেন। একই সাথে নগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের কাছেও প্রতিনিয়ত তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। এব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম অনেক বড় জায়গা, এখানে অনেক গুলো বিষয় আছে। আমরা চেষ্টা করছি সবার মতামতের ভিত্তিতে সুন্দর কমিটি উপহার দেয়ার জন্য। আমরা সবার বায়োডাটা পেয়েছি। সবার বায়োডাটা দেখছি। দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে কমিটি না হওয়ায় পদ প্রত্যাশী বেশি।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনকে ঘিরে নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদের জন্য ১ হাজারের বেশি নেতাকর্মী বয়োডাটা জমা দিয়েছেন বলে আজাদীকে জানান, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে একেবারে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যের জন্যেও চলছে ব্যাপক তদবির।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন পর নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ সম্মেলন উপহার দিতে। এই লক্ষে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। যারা দীর্ঘদিনের ত্যাগী-পরীক্ষিত তাদের দিয়েই কমিটি হোক আমরা সেটাই চাই। সম্মেলনের দিন অথবা পরের দিন কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
নতুন কমিটির শীর্ষ পদের জন্য নগর আওয়ামী লীগের প্রধানতম দুই গ্রুপের পাশাপাশি কমিটির বর্তমান নেতারাও শীর্ষ পদের ভাগ চান। কমিটির নেতারা হলেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক কেবি এম শাহজাহান এবং মো. সালাউদ্দিন।
এদিকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষপদের জন্য নগর আওয়ামীলীগের প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নগর আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের জোর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো।
প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেবাশীষ নাথ দেবু, লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন আজিজুর রহমান আজিজসহ অনেকেই। আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন অনুসারীদের মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যশীদের তালিকায় আছেন আইন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি সুজিত দাশ, কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যকরী সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বাপ্পী এবং আবদুর রশিদ লোকমান।
এদিকে অ্যাডভোকেট এ.এইচ.এম. জিয়া উদ্দিনের সাথে দীর্ঘদিন নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মকাণ্ডে নিজেদের সক্রিয় রেখেছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি আজাদ খান অভি। এছাড়াও এই গ্রুপে আছেন অ্যাডভোকেট তসলিম উদ্দিন।
অপরদিকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কে বিএম শাহজাহান তার অনুসারী দেবাশীষ আচার্য্য, জসীম উদ্দিন ও মনোয়ার জাহান মনিকে শীর্ষ পদে দেখতে চান বলে জানা গেছে। বর্তমান নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২১ সদস্যের কমিটির সদস্য নুরুল কবিরও পদ প্রত্যাশী বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য ২০০১ সালে অ্যাডভোকেট এ এইচ এম জিয়াউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন মাসের জন্য ২১ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘ ২০ বছর আর কোন সম্মেলন হয়নি।