চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা শনাক্ত হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টও পাওয়া গেছে সর্বোচ্চ, যা মোট আক্রান্তের ৭৮.৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বে করোনার আটটি ধরনের মধ্যে পাঁচটি শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং ঢাকার আইসিডিডিআরবির যৌথ গবেষণায় এবং বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) অর্থায়নে এক দল গবেষক এই ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত করেছেন।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক দলের প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল ফোরকান বিষয়টি তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গবেষকরা ধারণা করছেন, চট্টগ্রামে ভারতীয় প্রকরণের কমিউনিটি সংক্রমণ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছে।
ড. আল ফোরকান বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বিভাগের সাতটি কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাব হাসপাতাল থেকে ৪২টি নমুনা সংগ্রহ করে তার ভ্যারিয়েন্ট বিশ্লেষণ করেছি। এর মধ্যে ভারতীয় ২টি (৪.৮%), নাইজেরীয় ৩টি (৭.২%), যুক্তরাজ্যের ৪টি (৯.৫%) এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৩টি (৭৮.৫) ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য ড. বেনু কুমার দে, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান এবং সহযোগী গবেষক ড. লায়লা খালেদা আঁখিসহ গবেষক দলের সদস্যরা।
ড. আল ফোরকান বলেন, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত দুজন রোগীর কেউই সমপ্রতি ভারতে যাননি এবং ভারত ফেরত কারো সংস্পর্শে আসেননি। মে মাসের শেষের দিকে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এজন্য আমরা ধারণা করছি, চট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি সংক্রমণ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট প্রভাব বিস্তার করলেও বিভিন্ন দেশ হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা অত্যধিক। সত্তর বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা না করলে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
গবেষণা সহযোগী ড. লায়লা খালেদা আঁখি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় নতুন করে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ভারতীয় প্রকরণটি সনাক্ত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এখনই সতর্ক না হলে সংক্রমণ কমানোর বিষয়টি অনিশ্চয়তার দিকে চলে যেতে পারে।
গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. সুযত পাল, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. জিবরান আলম, রাহী হাসান চৌধুরী, এম ফিল গবেষক অমিত দত্ত ও ডা. শুভ দাশ, গবেষণা সহকারী ইনজামামুল ইসমাইল শাওন, বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহমান অপু, মো. মিফতাহ মুশফিক ও অম্লান ভাটাচার্য।