প্রতিবার ঈদের সময় মন্ত্রী-এমপি ও রাজনৈতিক নেতারা এলাকায় গিয়ে নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনসাধারণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। থাকে খাবারের আয়োজনসহ নানা কর্মসূচি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর এ রকম কোনো কর্মসূচি ছিল না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে বর্তমানে চলছে লকডাউন। তাই এবারও তাদের কোনো কর্মসূচি নেই।
করোনা মহামারীর কারণে গত বছর ঈদে কোনো আয়োজন ছিল না। এ বছরও রাষ্ট্রীয় অঙ্গনে ঈদ উৎসবের কোনো আয়োজন নেই। রাজনৈতিক নেতারা কুশল বিনিময়সহ ঈদকেন্দ্রিক নানা কর্মসূচি পালন করলেও এবার তার কোনোটিই হচ্ছে না। করোনার কারণে অনেক মন্ত্রী-এমপি এবং দলের শীর্ষ নেতা ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে তারা সবাই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার জনগণের জন্য উপহার সামগ্রীসহ পাঠাচ্ছেন ঈদের শুভেচ্ছা। এছাড়া যারা চট্টগ্রামে আবস্থান করছেন তাদেরও নেই কোনো আয়োজন। সরকার দলীয় এমপি এবং কয়েকজন শীর্ষ নেতার সাথে কথা হয়। তারা জানান, জনগণের সাথেই আছি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আমাদের শারীরিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে, কিন্তু মানসিকভাবে আমরা আরও কাছাকাছি চলে গেছি। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কোনো মানুষই স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ করতে পারছে না। সেখানে রাজনীতিবিদদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ করার সুযোগ নেই। তবে সাধ্যমতো সহযোগিতা ও সেবা করে যাচ্ছি।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাছান চৌধুরী নওফেল, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, দিদারুল আলম ও নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সংরক্ষিত আসনের এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামসহ দলের শীর্ষ নেতারা নিজ নিজ এলাকার জনসাধারণের মাঝে ঈদবস্ত্রসহ দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তাদের অনেকে ঢাকায়, অনেকে চট্টগ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবার ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ঢাকায় থাকবেন বলে জানা গেছে। সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী চট্টগ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করে বাঁশখালীতে নিজ এলাকায় নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এদিকে জাতীয় পার্টির মহানগরের সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠও নগরীর জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার উন্মুক্ত মাঠে ঈদের জামাত হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে সীমিত পরিসরে ঈদের জামাত আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের সময় তারা সচরাচর নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করতেন। এবার তার কোনোটি হচ্ছে না। তবে অনেক নেতা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে নেতাকর্মীরা এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুভেচ্ছা বিনিময় হতে পারে।