রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মচারীদের কোটি টাকা আত্মসাতকারী জুনিয়র হিসাব কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদকে খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার মামলা যাবে দুদকে। এ পর্যন্ত একাউন্ট হ্যাক করে কি পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে তা উদঘাটনে ২ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন- রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিএফএ (অর্থ) ফারজানা উম্মে খানম, ডিএফএ (বুকস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) আব্দুল আওয়াল। তদন্ত কমিটিকে কারিগরি সহায়তা দিতে টেকনিক্যাল সাপোর্ট অফিসার আব্দুল আল আসিফকে দেয়া হয়েছে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ হিসেবে। গত শনিবার সন্ধ্যায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী বিভাগীয় হিসাব বিভাগের জুনিয়র কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদ জালিয়াতির মাধ্যমে বিভাগীয় কার্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি টাকা সরিয়ে নেয়ার প্রমাণ পায় কর্তৃপক্ষ। এরপর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা কামরুন্নাহারের নির্দেশে তাকে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আজাদীকে জানান, জুনিয়র কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদকে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাসপেন্ড করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা কামরুন্নাহার আজাদীকে জানান, রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা আইভাস সিস্টেম চালু (অটোমেশনের মতো) হয়েছে মাত্র। অফিসারদের বেতন ভাতা এ সিস্টেমে দিচ্ছি মাত্র। এজন্য বেশ কয়েকজনকে আইভাস সিস্টেম বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। মাস্টার ট্রেইনারের মতো। এ ট্রেনিংয়ে ফয়সাল মাহমুদও ছিল। কে জানতো সে এতো বড় কাণ্ড করবে! আমাদের হিসাব শাখার ডেপুটি ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার মো.শাহজাহানের সন্দেহ হলে তিনি আমাকে ফোন দেন। এরপর তাকে আটক করা হয়। আজকে (গতকাল রোববার) তাকে খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে সরকারি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে মামলা হবে দুদকে।
এ ব্যাপারে খুলশী থানার ওসি মো. শাহীন উজ্জামান আজাদীকে জানান, রেলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফয়সাল মাহমুদ নামে একজন কর্মকর্তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে সোমবার কোর্টে প্রেরণ করা হবে।
সূত্র জানায়, এর আগে কয়েকজন কর্মচারীর বেতনের গড়মিলের অভিযোগ তদন্তে নামেন পাহাড়তলী হিসাব শাখার ডেপুটি ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার মো. শাহজাহান। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা মিলে। তিনি সবচেয়ে বেশি টাকা সরিয়েছেন ডিসেম্বর মাসে। মূলত নির্ধারিত অ্যাকাউন্টের বদলে নিজের অ্যাকাউন্ট নাম্বার বসান। এরপর একই নামে দুইবার বেতন পোস্টিং দিয়ে কৌশলে টাকা আত্মসাৎ করেন। তার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেয়া আরও কয়েকজন কর্মকর্তা এ কাজে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য,আইভাস সিস্টেম হলো রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ডিজিটালে দেয়ার পদ্ধতি। গত সেপ্টেম্বরে ‘আইভাস’ সিস্টেম চালু করা হয়।