সহিংসতায় জর্জরিত মিয়ানমারের সংকট নিরসনে জান্তাপ্রধান ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তাতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বেসামরিক নাগরিক হত্যায় সেনাবাহিনীকে জবাবদিহি করার প্রসঙ্গগুলো স্থান না পাওয়ায় এর কড়া সমালোচনা করছে মিয়ানমারের জনগণ। খবর বিডিনিউজের।
শনিবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের বৈঠকে মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে ঐক্যমত্য হলেও কিভাবে তা অর্জিত হবে তার কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি। মিয়ানমারের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসিয়ানের বৈঠকে হওয়া সমঝোতার সমালোচনা করলেও রোববার দেশটির বড় শহরগুলোতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আসিয়ানের বিবৃতি নির্যাতিত, হত্যাকাণ্ডের শিকার ও সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডে সন্ত্রস্ত জনগণের মুখে চপেটাঘাত। এমন মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে আপনাদের সহযোগিতার দরকার নেই আমাদের, বলেছেন মওচি তুন নামে এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ১০ দেশের জোট আসিয়ানের বর্তমান চেয়ার ব্রুনেই এক বিবৃতিতে শনিবারের বৈঠকে পাঁচটি পয়েন্টে ঐক্যমত্য হয়েছে বলে জানায়। এগুলো হল-সহিংসতা বন্ধ, সবপক্ষের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা, আলোচনার মধ্যস্থতায় আসিয়ানের পক্ষ থেকে বিশেষ দূত মনোনয়ন, সহায়তা নেওয়া ও বিশেষ দূতের মিয়ানমার সফর। এই পাঁচ পয়েন্টের মধ্যে বন্দি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের প্রসঙ্গটি স্থান না পেলেও বৈঠক তাদের মুক্তির ‘ডাক শুনেছে’ বলেও আসিয়ান চেয়ারম্যানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে। আসিয়ান নেতারা মূলত হ্লাইংয়ের কাছ থেকে তার নিয়ন্ত্রণাধীন নিরাপত্তা বাহিনীর সংযত থাকার প্রতিশ্রুতি আদায় করতে বেশি সচেষ্ট ছিলেন।
আসিয়ানের এবারের সম্মেলনটি ছিল মিয়ানমারের সংকট নিরসনে প্রথম কোনো সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা। অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া পার্লামেন্ট সদস্যদের একাংশ, গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের সুপরিচিত মুখ ও বিভিন্ন জাতিগত সংখ্যালঘু নেতাদের নিয়ে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ আসিয়ানের বৈঠকে হওয়া সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছে। জাকার্তার বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও ব্রুনেইয়ের শীর্ষ নেতারা ছিলেন। লাওস, থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্স থেকে ছিলেন দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।