হল্যান্ড থেকে বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়ার “মার্কিন ক্ষমতায় জো বাইডেনের ১০০ দিন” শীর্ষক যে কলাম শনিবার ছাপানো হয়েছে তাতে তথ্য ও পর্যালোচনাগত অপরিপক্বতা রয়েছে। উনি লিখেছেন, বর্তমানে আফগানিস্তানের ৮০% এলাকা সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। আমি জানতে চাই এই তথ্য উনি কোথায় পেলেন। এটা যদি দশ বছর আগের তথ্য হয় তবে বর্তমানে বলে চালিয়ে দিলেন কেন? স্বয়ং আফগান সরকারি রেডিওর গত বছরের জরিপে বলা হয়েছে তাদের ৫২% এলাকা নিয়ন্ত্রণে আছে, বাকিটা তালেবান সহ অন্যান্য গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে। আর তালেবানের তথ্য মতে, ৭০% এলাকা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া গত মার্চে বিবিসির তিনজন সাংবাদিক আফগানিস্তান ভ্রমণ করে একটি প্রতিবেদন পেশ করেছেন। তারাও বলেছেন অধিকাংশ স্থানেই তালেবানের নিয়ন্ত্রণ আছে। সরকারি বাহিনী রাজধানী কাবুল ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের কিছু বাজার, উপশহরে থাকলেও তারা ক্যাম্প ছেড়ে বের হয়না। আর কমনসেন্স দিয়ে চিন্তা করলেও বোঝা যায়, ৮০% এলাকা দখলে থাকলে সেখান থেকে মার্কিন বাহিনী কখনো পালাবে না। দেশীয় সহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারকে “মার্কিনিদের পলায়ন” বলে আখ্যা দিয়েছে। আর সেখানে বিকাশ দাদা আজগুবি পক্ষপাতদুষ্ট কিছু কল্পনা তুলে ধরলেন। উনি আরো বলেছেন, নাইন-ইলেভেনের পর মার্কিনিদের আফগানিস্তান হামলার পর শুধু আফগান নয়, পুরো অঞ্চল থেকে তালেবান বিতাড়িত হয়েছিল! আমার প্রশ্ন, এই ‘পুরো অঞ্চল’ বলতে কী বুঝিয়েছেন উনি এবং কয়টা দেশে তালবানের বিরুদ্ধে মার্কিন পদক্ষেপ দেখেছি আমরা? কয়টা দেশে তালেবান আছে? অত্র অঞ্চল থেকে তালেবান বিতাড়ন তো দূরের কথা, মার্কিন মিত্র পাকিস্তানের তালেবানপ্রীতি-ই তো তারা দূর করতে পারেনি। আর পুরো অঞ্চল থেকে তালেবান বিতাড়িত হলে আজ দশ-পনের বছরে এতো তালেবান কোথা থেকে এলো? বিষয়গুলো নিয়ে আমি পড়াশোনা করেছি এবং সবসময় করি। গতকালই আফগানিস্তানের নতুন অধ্যায় শীর্ষক আমার কলাম প্রকাশ পেয়েছে। তাই এই পর্যালোচনার তথ্য বিভ্রাট ও অপরিপক্বতা আমার নিকট দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে।
আরমান শেখ, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, সভাপতি, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চবি শাখা।