কাস্টমসের রাজস্বে করোনার প্রভাব

৯ মাসে আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৯শ কোটি টাকা কম

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১০ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে সামগ্রিক রাজস্ব আদায় কমেছে। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস অর্থাৎ জুলাই থেকে গত মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৯শ’ কোটি (১১ হাজার ৮৯৯ কোটি ৯৩ লাখ ) টাকা কম আদায় হয়েছে। তবে আশার কথা হলো তুলনামূলকভাবে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। টাকার অংকে প্রায় ২ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা এবং রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত বিশাল রাজস্ব ঘাটতির বিষয়ে কাস্টমস কর্তারা বলছেন, প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ কিন্তু বাড়ছে। এই অর্থবছরেও লক্ষ্যমাত্রা আগের বছরের চেয়ে বেশি ধরা হয়েছে। তবে বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে সারা পৃথিবীতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই বিশাল রাজস্ব ঘাটতি হতো না।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৪ হাজার ৩০৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সে হিসেবে জুলাই থেকে গত মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪৬ হাজার ৯৫২ কোটি ৯ লাখ টাকা। অন্যদিকে এই সময়ে আদায় হয়েছে ৩৫ হাজার ৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রথম নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৮৯৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে আরো জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ হাজার ৮৯৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা, আগস্টে ৫ হাজার ২০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৪ হাজার ৩৭৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, অক্টোবরে ৫ হাজার ২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, নভেম্বরে ৫ হাজার ৯৩২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং ডিসেম্বরে ৫ হাজার ৩৩৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। এছাড়া জানুয়ারিতে ৫ হাজার ৬০৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ৪ হাজার ৮৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা, মার্চে ৫ হাজার ৪৬১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, এপ্রিলে ৬ হাজার ২১৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, মে মাসে ৬ হাজার ৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং জুনে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪২ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
কাস্টমসের কর্মকর্তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বেই আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ফলে দেশীয় শিল্পের কাঁচামাল আমদানি আগের তুলনায় কমে গেছে। এছাড়া উচ্চ শুল্কের অনেক পণ্যের আমদানিও এই সময়ে কমেছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হয়নি। তবে এরমধ্যে আবার বেশ কয়েক মাস গত অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
লক্ষ্যামাত্র প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হলেও গত অর্থবছরের এই সময়ের তুলনায় এখন পর্যন্ত পজিটিভ গ্রোথই আছে। তবে রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি। গত কয়েক মাস করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ফের বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। এতে আমদানিতে আবারও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বলা যায়, এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করার সুযোগ একেবারে কম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন মাসের ব্যবধানে মশার ঘনত্ব দ্বিগুণ
পরবর্তী নিবন্ধদুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন চায় জাতীয় কমিটি