করোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারে ১৩ জন চিকিৎসকসহ ৩৬ জনকে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। লালদীঘি পাড়স্থ সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় গড়ে তোলা আইসোলেশন সেন্টারটি আজ দুপুর ১২টায় উদ্বোধন করবেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। একইসঙ্গে আজ থেকে সেখানে রোগী ভর্তি করা হবে। আইসোলেশন সেন্টারের শয্যাগুলোর মধ্যে ৩৫টি পুরুষ এবং ১৫টিতে নারীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র করে রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, মানুষের মধ্যে করোনা আতংক কমেছে। কিন্তু সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে। এতদিন আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছিলাম। এখন পরিস্থিতি বিবেচনা করে আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিতে আইসোলেশন সেন্টার করা অপরিহার্য হয়ে ওঠছে। তাই প্রাথমিকভাবে ৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার করলাম। প্রয়োজন হলে শয্যা সংখ্যা আরো বাড়াব। মেয়র বলেন, অক্সিজেনসহ সব ধরনের সুবিধা থাকবে আইসোলেশন সেন্টারে। চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ দিয়েছি। আজকেও (গতকাল) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিটিং করে নির্দেশনা দিয়েছি। গত বছর আমি নিজেও একটি আইসোলেশন সেন্টার পরিচালনা করেছিলাম। সে অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাচ্ছি। রোগীদের সেবা নিশ্চিতে যা যা করা দরকার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। মেয়র জনগণকে চলমান লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মানারও আহ্বান জানান।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল চলমান করোনা পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে কর্পোরেশনের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে করেন মেয়র। ওইদিন আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত দেন মেয়র। পরে সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন পরিদর্শনে এসে দ্রুত সময়ে সেখানে আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তুলতে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীকে নির্দেশনা দেন।
এদিকে গতকাল চিকিৎসকসহ ৩৬ স্বাস্থ্যকর্মীকে আইসোলেশন সেন্টারে পদায়ন করে অফিস আদেশ জারি করেছেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। এতে চসিকের আরবান হেলথ প্রকল্প পিএ-১ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডা. মো. মুজিবুল আলম চৌধুরীকে কো-অর্ডিনেটর ও কাট্টলী ইপিডআই জোনের জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন তালুকদারকে সহকারী কো-অর্ডিনেটর করে ১১ জন চিকিৎসককে আইসোলেশন সেন্টারের মেডিকেল অফিসার পদে পদায়ন করা হয়। এছাড়া ৮ জন ফার্মাসিস্ট, ৪ জন প্যারামেডিক, ৩ জন ওয়ার্ড মাস্টার, ৬ জন ওয়ার্ডবয়, একজন স্টোর কিপার ও একজন অফিস সহায়ককে পদায়ন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা করোনা রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধপত্র-অঙিজেন সার্পোট, খাবারসহ সব ধররের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সেবা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া রোগী পরিবহন ও স্থানান্তরের জন্য সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস থাকবে। আক্রান্ত রোগীর অবস্থা জটিলতর হলে তা সারিয়ে তুলতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে বিশেষ পরামর্শ গ্রহণ করা হবে এবং টেলি মেডিসিন সেবারও ব্যবস্থা থাকবে।