সাক্ষ্যই শেষ হচ্ছে না, আরও সময় চাইবে রাষ্ট্রপক্ষ

কোকেন কাণ্ড

| বৃহস্পতিবার , ২৫ মার্চ, ২০২১ at ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ

তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় করা মাদক মামলার বিচার উচ্চ আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শেষ করা যায়নি। অভিযোগপত্র দেওয়ার পর চার বছরে মামলায় সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এক চতুর্থাংশ সাক্ষীর। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আসামিদের আবেদন ও করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত হয়েছে। এমন অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষ মামলার কার্যক্রম পরিচালনায় উচ্চ আদালতে সময়ের আবেদন করবে বলে জানিয়েছেন মামলা পরিচালনাকারী পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী। খবর বিডিনিউজের।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এই মামলাটি ২৮ মার্চের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশনা দিয়েছিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। এদিকে গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞার আদালতে লিটন সেন ও গোবিন্দ বৈদ্য নামের জব্দ তালিকার দুই আসামি সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ দু’জন তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় জড়িত প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের অফিস ভবনের নিচতলার একটি অফিসে কর্মরত ছিলেন।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন ফারুকী মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের কার্যালয় থেকে কম্পিউটার সিপিইউ, সিডি ও সিডি ড্রাইভ সংগ্রহের সময় তারা উপস্থিত ছিলেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ বলেন, গতকাল পর্যন্ত ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। ৩১ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। এই মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামি উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করলে গত বছরের ২০ আগস্ট আদালত আদেশ প্রাপ্তির ছয়মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে মামলাটির কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দেন।
পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে বিচার কাজ শেষ না হলে আসামিদের জামিনের আবেদন বিচারিক আদালতে বিবেচনা করার নির্দেশনাও দেওয়া হয় বিচারপতি এমদাদুল হক ও আকরাম হোসেন চৌধুরীর দেওয়া ওই আদেশে। আদেশ অনুসারে সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে ২৮ মার্চ। এই মামলায় মোট সাক্ষী ৬৪ জন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৬৪ জনের মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন সাক্ষী আছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। এছাড়া আসামিরা বারবার উচ্চ আদালতে যাওয়ায় মামলার কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে পরিচালনা সম্ভব হয়নি। এসব কারণে কিছু সময় লেগেছে। গত একমাসে ১২ জন সাক্ষী দিয়েছেন। আমরা আবার সময়ের আবেদন করব। আশা করি উচ্চ আদালত আমাদের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করবেন। আসামিরা জামিনের আবেদন করলে সেটা বিচারিক আদালত বিবেচনা করবেন।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রায় এক বছর নয় মাস পর মামলাটিতে আবার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় করা মামলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ওই বছরের ১৯ থেকে ২২ মে পর্যন্ত চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল। তারপর আর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
আলোচিত এই মামলার আসামিরা হলেন, চট্টগ্রামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ, দুই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া, নূর মোহাম্মদের ভাই মোস্তাক আহম্মদ, খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে এম আজাদ এবং সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।
এদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ জামিনে গিয়ে পলাতক হয়েছেন। তার ভাই মোস্তক আহম্মদ শুরু থেকেই পলাতক। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান এবং বকুল মিয়াকেও পলাতক দেখানো হয়েছে। কারাগারে আছেন গোলাম মোস্তফা সোহেল এবং আতিকুর রহমান। বাকি চার আসামি জামিনে আছেন। মামলায় র‌্যাবের সম্পূরক অভিযোগপত্রে এই ১০ জনকেই আসামি করা হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিউজপ্রিন্টে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি নোয়াবের
পরবর্তী নিবন্ধপাঁচ দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রশংসনীয় : সোনিয়া গান্ধী