সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করেছে।
সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসীদের অংশগ্রহণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।
রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
আবুধাবিস্থ জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান অফিস ও বাংলাদেশ স্কুল এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক—সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এরপর দূতাবাসের মিলনায়তনে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভার শুরুতে এ দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কতৃর্ক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
স্থানীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিসহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দিবসের তাৎপর্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত তার সমাপনী বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “৭ মার্চের ভাষণ বঙ্গবন্ধুর হৃদয় থেকে উৎসারিত কালজয়ী অনবদ্য কাব্য যা শুধু বাংলার মানুষের নয় বরং সমগ্র বিশ্বের স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী নির্যাতিত জনতার কাছে ন্যায়সঙ্গত স্বাধীকার আন্দোলনের চিরন্তন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ এবং বাঙালিকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন বলেই তার পক্ষে এরূপ অনবদ্য ভাষণ প্রদান সম্ভব হয়েছিল। সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় রেখে তিনি অত্যন্ত প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার সাথে এ ভাষণে বাংলার মানুষের চূড়ান্ত অধিকার তথা স্বাধীনতা অর্জনের রূপরেখা প্রদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন বলেই তাঁর নেতৃত্বে বাঙালিরা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছে।”
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, “সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন তাঁর যোগ্য কন্যা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই রূপকল্প ২০২১ এবং রূপকল্প ২০৪১ ঘোষণা করেছেন। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে প্রথম ধাপের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা অর্জন করেছে। এখন দ্বিতীয় ধাপ তথা দেশকে উন্নত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।”
এ লক্ষ্য অর্জনে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য রাষ্ট্রদূত আহ্বান জানান।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নত করতে হলে প্রত্যেক প্রবাসীকে উন্নত আচরণে অভ্যস্ত হতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রসারে সবাইকে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি আহ্বান জানান।
জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদ্যস্যদের রুহের মাগফিরাত ও দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি হয়।