সোমেন চন্দ – প্রগতিশীল কথাসাহিত্যিক এবং মার্কসবাদী আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী। ঢাকার প্রগতি লেখক সংঘের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলন বিকাশে তাঁর ভূমিকা ছিল উজ্জ্বল। শ্রেণির উর্ধ্বে সর্বমানবের মর্যাদায় আস্থাবান মেধাবী তরুণ সোমেন চন্দ মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৪২ সালের ৮ মার্চ নিহত হন। সোমেন চন্দের জন্ম ১৯২০ সালের ২৪ মে নারায়নগঞ্জের বালিয়ায়। ১৯৩৬ সালে মাধ্যমিক পাস করে মিডফোর্ড মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। সে সময় হিটলারের ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বের দেশে দেশে প্রগতিশীল লেখক, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরা দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৩৯ সালে ঢাকায় মানবতাবাদী লেখকদের উদ্যোগে গড়ে ওঠে প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘ। এই সংঘের সর্বকনিষ্ঠ অথচ অন্যতম প্রধান উদ্যোগী ছিলেন সোমেন চন্দ। সংঘের প্রথম আনুষ্ঠানিক সম্মেলনে রণেশ দাশগুপ্তকে সম্পাদক এবং সোমেন চন্দকে সহ-সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়। সংঘের পক্ষ থেকে ১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয় ‘ক্রান্তি’ নামে একটি সাহিত্য সংকলন। সোমেন চন্দ ছিলেন এর প্রকাশক।
পূর্ব বাংলায় এটিই প্রথম সাহিত্য সংকলন। এই সংকলনটিতে সোমেন চন্দের বিখ্যাত গল্প ‘বনষ্পতি’ প্রকাশিত হয়। ‘বন্যা’ উপন্যাসটি তাঁর সতেরো বছর বয়সে লেখা। সোমেন চন্দের ‘ইঁদুর’ গল্পটি পৃথিবীর বেশ কিছু ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
১৯৪২ সালের ৮ মার্চ ঢাকায় ফ্যাসিস্ট বাহিনির ভাড়াটে গুণ্ডাদের হামলায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হন প্রতিশ্রুতিশীল এই লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী। তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় ‘সংকেত ও অন্যান্য গল্প’ নামে একটি গ্রন্থ। এতে কুড়িটি গল্প, দুটি নাটক ও একটি কবিতা সংকলিত রয়েছে।