বর্ণিল সাজে সেজেছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। দশ একরেরও বেশি আয়তনের চিড়িয়াখানায় পশু পাখির সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নান্দনিকতা তৈরিরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিশু কিশোরদের কাছে চিড়িয়াখানাকে শুধু বিনোদনই নয়, শিক্ষণীয় করে গড়ে তোলা হচ্ছে। চিড়িয়াখানার প্রধান সিঁড়িটি লাল, সবুজ, হলুদ, নীল রঙের ঝলকানিতে বর্ণিল করা হয়েছে। নিচ থেকে একেবারে উপর পর্যন্ত বিস্তৃত চমৎকার সিঁড়িটি আজ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামে চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হয় ১৯৮৯ সালে। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ৬ একর পাহাড়ি জমির ওপর বেসরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার যাত্রা। বর্তমানে চিড়িয়াখানার জমির পরিমাণ ১০ দশমিক ২ একর। বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, হায়েনা, জেব্রা, ময়ূর, কুমির, গয়াল, বানর, উল্লুক, চিত্রা ও সাম্বার হরিণ, চিল, শকুন, শজারু, উটপাখি, ইমু, শেয়াল, মেছোবাঘ, অজগর, গন্ধগোকুল, পায়রা, টার্কি, তিতিরসহ ৬৬ প্রজাতির ৬২০টি পশুপাখি রয়েছে। একসময় বাঘশূন্য হয়ে পড়া চিড়িয়াখানাটিতে বর্তমানে ছয়টি বাঘ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বিরল প্রজাতির একটি সাদা বাঘ। রয়েছে ছোট্ট একটি বাঘের শাবকও। সবকিছু মিলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা এখন অতীতের যে কোনো অবস্থা থেকে দর্শনার্থীদের বেশি আনন্দ দিতে সক্ষম বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় প্রতিদিন গড়ে হাজার দুয়েক মানুষ বেড়াতে আসেন। প্রতিজনকে ৫০ টাকা টিকেট কেটে প্রবেশ করতে হয় চিড়িয়াখানায়। টিকেট বিক্রিই চিড়িয়াখানার প্রধান আয়ের উৎস। এ আয় থেকেই চিড়িয়াখানার উন্নয়নসহ যাবতীয় খরচ নির্বাহ করা হয়। পশু পাখিদের খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণে বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও গত ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা এখন অনেক বেশি সমৃদ্ধ, নান্দনিক। চিড়িয়াখানায় প্রচুর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় চিড়িয়াখানায় আশাতীত উন্নয়ন হয়েছে। অবকাঠামোগত নানা উন্নয়নের পাশাপাশি রয়েছে পশুপাখি সংগ্রহ এবং বংশ বিস্তারে সফলতা। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার উন্নয়নে আরো বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হবে।