একটা মানুষ কতোটা মহান কতোটা ভালো মানুষ তা তার মৃত্যুর পরই বুঝা যায়। পরিবার নিকট আত্মীয় ছাপিয়ে পাড়া প্রতিবেশী পুরো সমাজ গোটা এলাকার বুক জুড়ে হাহাকার। হায় কি হারালাম – কি হারালাম। এমন একটা শোকের মাতম নারায়ণ হাট এলাকার প্রতিটি মানুষের মনে। নিঃস্ব মানুষের পরম আশ্রয় এডভোকেট শাহাজাহান চৌধুরী। চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। একজন সফল নিরহংকারী মানুষ। বাবা বদিউল আলম চৌধুরীর একান্নবর্তী পরিবারের তথা পুরো চৌং পরিবারের পুরোধা পুরুষ। শক্ত হাতে সামলিয়েছেন পরিবার সমাজ এলাকার বিপদআপদ। কত শত ছাত্র ছাত্রীর পড়ালেখার খরচ যোগাতেন নিজেও জানতেন না।কেউ সাহায্য র জন্য হাত পাতলে হেসে বলতো— লাখ টাকা কোটি টাকা হয়তো দিতে পারবো না তবে আমি যতটুকু পারি সাহায্য করবো।কাউকে নিরাশ করতেন না।সেটা আপন পর যেই হোক।সবার ব্যাপারে উদার হস্ত এ মানুষটি ১৭ ফেব্রুয়ারি করোনা মহামারীর কাছে হার মেনে চলে গেলেন ওপারে। চলে যাওয়া বললেই কি চলে যাওয়া হয়?কিছু কিছু মানুষের মৃত্যুর পরও আজীবন বেঁচে থাকেন তাঁদের কর্মে মানুষের ভালোবাসায়।এডভোকেট শাহাজাহান চৌধুরী সে ঘরানার মানুষ।
এ্যানির সাথে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে ছোটবেলা থেকেই উনাকে জানতাম। চিনতাম কি?চেনাজানার চৌহদ্দি তে তেমন একটা দেখিনি উনাকে। তবে মেজো আব্বু র কথা শুনতাম প্রায় ই এনির মুখে।আর প্রতি ঈদে মুমু ঝুমু কে পেতাম। আট দশ বছরের নাদুস পুতুল দুটো তাদের এনি আপুর সাথে চলে আসতো আমাদের বাড়ি। মেজো আব্বু কে চেনার অধিক এ মুমু ঝুমু কে চিনতাম। সাত আট বছরের স্কুলে কাটানোর সময়টায় একটা ঈদও বাদ যায়নি এনি মুমু ঝুমু কে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসেনি।
হ্যা মুমু ঝুমু র বাবা এডভোকেট শাহাজাহান চৌধুরী আজ না ফেরার দেশে চলে গেলেন। একজন ভালো মানুষ শাহাজাহান চৌধুরী চোখ বুজলেন চিরতরে। তাঁর মুমু ঝুমু কে ফেলে জেনিথ ইজাজ র চোখের আড়ালে চলে গেলেন চিরতরে। ছোট আর তিন ভাইয়ের একমাত্র আইডল মানুষটি হারিয়ে গেলেন চিরতরে। আসলে হারিয়ে যাওয়া বললেই কি হারিয়ে যাওয়া যায়? উনার মতো মহান হৃদয়ের মানুষরা কখনো হারায়না। যুগে যুগে কালে কালে বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে। পরিবার সমাজ সর্বোপরি এলাকার মানুষের উন্নয়নে যারা নিজেদের অকাতরে বিলিয়ে দেয় তাঁরা ই মহান। নিজের পরিবার কে শক্ত হাতে ধরে দিকচেনা নাবিকের মতো মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন এডভোকেট শাহাজাহান চৌধুরী।