একুশ এলেই মনে পড়ে যায় সেই ছোটবেলার কথা। তখনকার বয়স অনুযায়ী এতটুকু বুঝতে পারতাম যে, ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে কিছু একটা হয়েছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন। তবে তখনকার সময়ে বাবা মা ও স্কুল শিক্ষকের আদেশ পালনে ব্রত ছিলাম। জন্মের পর থেকে অনেক স্মৃতি জড়ানো উত্তর কাট্টলীতে আমার প্রাইমারি এবং হাইস্কুল গন্ডি পার করা। ভোরে উঠেই আমরা কয়েকজন দুষ্ট বান্ধবীর প্ল্যান অনুযায়ী মিশন সাকসেসফুল। ঝুড়ি ভর্তি নানান রঙের ফুল। এবার ভোরের আলো ফোটার আগেই শিক্ষকের কথামতো রাস্তায় লাইনে দাঁড়িয়ে গেলাম। ডান হাতে বিভিন্ন গাছের পাতা ও মাঝখানে ফুল দিয়ে মুড়ানো নিজেদের তৈরি করা টব। কি যে খুশি, আমরা শহীদ মিনারে যাচ্ছি। সবার কন্ঠের সাথে তাল মিলিয়ে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি “গানটা গেয়ে গেয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। গন্তব্য কর্নেল হাট কাট্টলী নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়, তারপর ফিরোজশাহ কলোনির স্কুলের পাশের শহীদ মিনার ঘুরে আবার নির্দিষ্ট স্থানে ফিরে আসা। কমপক্ষে ৩ মাইলের মতো হাঁটা হয়ে গেছে। কোনো ক্লান্তি অনুভব হয়নি শুধুই ছিল কিছু একটা করতে পারার তৃপ্তি ও আনন্দ। কিন্তু এখনকার ছেলে মেয়েদের চিত্র ভিন্ন। এইসব জাতীয় দিবসের প্রতি তেমন একটা আগ্রহ নেই বললেই চলে। এটা আমরা যারা বাবা-মা এবং স্কুল শিক্ষক আছি, তাদের ব্যর্থতা বলা যায়। ইতিহাস থেকে শিশুদের অনেক কিছু শিখার আছে। তারা ত্যাগী হতে শিখবে, দেশকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, সর্বোপরি একজন আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে উঠবে।