চট্টগ্রামে আনিসুজ্জামান

শাকিল আহমদ | শুক্রবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

এই সমাজে দ্যুতিহীন মানুষের ভিড়ে ক্রমাগত কমে যাচ্ছে দ্যুতিময় মানুষ। একটি স্বাভাবিক সমাজের ভারসাম্য রক্ষার্থে এটি কোন সুখকর সংবাদ নয়। এই বিষয়টি পুরু সমাজ ব্যবস্থাকে আর একবার গভীরভাবে নাড়া দিয়ে আমাদেরকে স্মরণ করে দিয়ে গেলো আনিস স্যারের (১৮ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭-১৪ ই মে ২০২০) চলে যাওয়াটা।
এই শহরে (চট্টগ্রাম শহর) আনিস স্যারের দীর্ঘজীবনের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর বটে। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙলা বিভাগে কর্মসূত্রেই এই সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে আছে জীবন চলার পথে আরো হাজারো স্মৃতিময় ঘটনার ঘনঘটা।
প্রফেসর ডক্টর আনিসুজ্জামান প্রথম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগদান করেন ১৯৬৯ সালের ৩ জুন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদানের পর থেকে প্রফেসর আনিসুজ্জামানের চট্টগ্রামের সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে এক উজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। সে থেকে বাঙালির যুগান্তকারী মুক্তি সংগ্রামেও তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ এই চট্টগ্রাম থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের দিন কয়েকের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া দেশে সাধারণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ছিলেন। কয়েক দফা তারিখ পিছানোর পর ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। উল্লেখ্য আমাদের আনিস স্যার জীবনের প্রথম ভোটার ছিলেন এই সাধারণ নির্বাচনে হাটহাজারী এলাকায়। তখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ এবং কনভেনশন মুসলিম লীগের প্রার্থী ফজলুল কাদের চৌধুরী। আনিসুজ্জামান তাঁর জীবনের প্রথম ভোটটি ডিসি অফিসে গিয়ে অগ্রিম প্রদান করে এসেছিলেন, কারণ তাঁকে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে চলে যেতে হয় ফটিকছড়ি থানার সর্বো উত্তরে হেঁয়াকো নামক দুর্গম অঞ্চলে। ষোল বছর সময় ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত থেকে ফিরে যান তাঁর জীবনের প্রথম কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সালে ১৯ শে আগস্ট।
কিন্তু ঢাকা যাওয়ার পরও শত ব্যস্ততার মাঝেও স্যার হাজারো স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রামে ছুটে আসেন সভা-সমিতি-স্মারক বক্তৃতা, স্মরণ অনুষ্ঠান কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষকের আমন্ত্রণে। আর সে সুবাদে গত তিন দশকেরও অধিককাল ধরে আনিস স্যারের অসংখ্য মূল্যবান বক্তৃতা স্মারক বক্তৃতা শোনার সুযোগ আমার হয়েছে। সম্ভবত আনিসস্যারের চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবনে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত শেষ স্মারক বক্তৃতা ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ স্মারক বক্তৃতা “আমরা কি সংকটের মুখোমুখি”? তখনো কিন্তু তিনি বয়সের ভারে খানিকটা অসুস্থবোধ করছিলেন। তবুও যেন তিনি রাষ্ট্র ও সমাজের দায় এড়াতে পারেন না। সেই বক্তৃতায় তাঁর মূল বিষয় ছিল ৪৪ বছরে বাংলাদেশকে বেশ কিছু সংকটের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তার উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ।
জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় রাজধানী ঢাকায় অতিবাহিত করলেও ১৯৬৯ সালে আগমন এবং ১৯৮৫ সালে ফেলে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মজীবন, অসংখ্য গুণগ্রাহী ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী ও চট্টগ্রামের শিল্প-সাহিত্য ও সুশীল সমাজের মায়াজালে আবদ্ধ ছিলেন বলেই আনিস স্যার বাকি জীবনের প্রান্ত বেলায় এসেও চট্টগ্রামের ভালোবাসার মানুষের ডাকে বারবার ছুটে এসেছেন তাঁর এই মায়াবি চট্টগ্রামে। বাংলা বিভাগের চল্লিশ বৎসর পূর্তি উপলক্ষে ২০০৮ সালে বাঙলা সম্মিলন-এ আইয়ুব ভুঁইয়া সম্পাদিত ‘এক সে পদ্ম তার ছোষট্টি পাখনা’ স্মৃতির এ্যালবামে আনিস স্যার লিখেন-“১৯৬৯ সালে অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান আমাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে নিয়ে এসেছিলেন। আমি এই বিভাগ ছেড়ে যাই ১৯৮৫ সালে। মাঝে মাঝে সুখ দুঃখের দোল-দোলানো ষোলবছরের কিছু বেশি সময়। চট্টগ্রাম থাকতে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার সৌভাগ্য ঘটে আমার। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এখানে বাংলা বিভাগ গড়ে তোলার সুযোগ পাই। কৃতী শিক্ষকদের সম্মিলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে এক সময় সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। ছাত্র-ছাত্রী সহকর্মীদের নিয়ে বাংলা বিভাগের চমৎকার পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। আন্তরিকতার সেই বন্ধন আজও অটুটু রয়েছে। বিভাগের চল্লিশ বৎসর পূর্তি উপলক্ষে যে পুনর্মিলনীর আয়োজন হয়েছে, সেটা তারই নিদর্শন।” বাঙলা সম্মিলন ‘দ্বিতীয় পুনর্মিলন ২০১০ সালে আইয়ুব ভুঁইয়া সম্পাদিত “জল পড়ে পাতা নড়ে” সঙ্কলনে আনিসুজ্জামানের ‘ফিরে দেখা’ দীর্ঘ রচনাটিতে মূলত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ষোল বছর কর্মজীবনে নানা ঘটনা প্রবাহ, বাঁক বদল এবং বিভাগীয় ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের অনেক ঐতিহাসিক চিত্রই উৎভাসিত হয়েছে। এই রচনার মধ্য দিয়ে লেখক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অজানা তথ্যের অবতারণা করেছেন।
আমাদের আনিস স্যার প্রথম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের বিষয়টি তাঁর অন্যতম স্মৃতি কথার গ্রন্থ “আমার একাত্তর” এর শুরুতেই প্রকাশ করেন এভাবে “১৯৬৯ সালে ২৫ মার্চ সকালের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে গিয়ে পৌঁছালাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের রিডারের পদের জন্য আবেদন করেছিলাম আগের বছর। বিভাগের অধ্যক্ষ ও আমার শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসানের পরামর্শে। তার জন্যে সাক্ষাৎকারের সময় ধার্য হয়েছে ২৬ মার্চ সকালবেলা। সুতরাং ২৫ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছে উঠলাম রেলওয়ের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা আমার বন্ধু আবদুল আলী ওরফে খোকনের বাটালি হিলের সরকারি বাসায়।” জীবন চলার পথে যিনি এ ভাবেই একদিন এই শহরে (চট্টগ্রাম) প্রবেশ করেছিলেন তিনি হাজারো স্মৃতির ভাণ্ডার নিয়ে এই চট্টগ্রামকে ত্যাগ করলেও আমৃত্যু কিন্তু নানাভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে ছিলেন প্রিয় চট্টগ্রামের সাথে। তাঁর জীবনের অন্যতম গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততাও শুরু হয় এই চট্টগ্রাম থেকেই।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুর প্রাক্কালে এই চট্টগ্রামে এক অগ্রণী ভূমিকা রাখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এ. আর মল্লিকের সাথে সে সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন আমাদের আনিসস্যার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে দিন কয়েক মুক্তিযুদ্ধের নানা কাজ পরিচালনা করেন। এই চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন আনিসস্যার। এক্ষেত্রে তাঁর “আমার একাত্তর” এক ঐতিহাসিক দলিলও বটে।
যুদ্ধ চলাকালীন অস্থায়ী সরকারের সাথে নানা কাজে সম্পৃক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আনিসুজ্জামানের কর্ম পরিধিতো সবারই জানা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সংবিধান প্রণয়নে যুক্ত থাকা থেকে শুরু করে প্রায় অর্ধশতক ধরে সর্বশেষ যুদ্ধপরাধীদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো পর্যন্ত এই স্বাধীন দেশের প্রতি তাঁর দায়িত্ব বোধকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে চিরকাল।
জীবনের প্রায় পুরোটাসময় শিক্ষকতা, গবেষণা এবং শিল্প-সাহিত্যে নিমগ্ন থেকেছেন আনিসুজ্জামান। একজন গবেষক হিসেবে আনিসুজ্জামানের খ্যাতি ও অর্জন আকাশ স্পর্শী। মাত্র ২৪-২৫ বছর বয়সের পিএইচডি গবেষণা‘মুসলিম-মানস ও বাংলা সাহিত্য’ সম্পর্কে আমাদের আর এক জ্ঞানতাপস চট্টগ্রামের গৌরব ড. আহমদ শরীফ মূল্যায়ন করেন “সাম্প্রতিক কালে যে কয়টি ডক্টরিয়াল থিথিস বের হয়েছে, সে সবের মধ্যে ড. আনিসুজ্জামানের গ্রন্থটি শ্রেষ্ঠ বলে মনে করি, এ এমন একটি বই যা একবার পড়ে ফেলে রাখার মতো নয়, বারবার পড়ার প্রয়োজন এবং প্রতিবারই নতুন নতুন তথ্য ও তত্ত্বের উদ্ভাস ঘটে এবং চিন্তার উদ্দীপন হয়। এ গ্রন্থ কেবল লেখকের গৌরবের বস্তু নয়, পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্বান সমাজেরও গর্বের হেতু।”
আনিসুজ্জামান শুধুমাত্র বাংলাসাহিত্যের ছাত্রদের বটবৃক্ষ ছিলেন না তিনি ছিলেন এদেশের পুরু ছাত্র-সমাজেরই এক মহিরুহ। এই বিশাল বৃক্ষের ছায়াতলে যিনিই গেছেন তিনিই সুশীতল স্নিগ্ধ ছায়ায় নিজেকে অবগাহন করেছেন। এই সমাজের মানুষ যে তাঁর ছায়াতলে যেতে চায় তা বোধ করি তিনি তাঁর দীর্ঘজীবনে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন বলেই আমরা দেখেছি জীবনের প্রান্ত বেলায় এসেও যে কারো ডাকে সারা না দিয়ে থাকতে পারতেন না। শারীরিক অসুস্থতা কিম্বা মানসিক শতকষ্টের মধ্যেও দেখেছি তিনি ঘরে বিশ্রাম না নিয়ে ছুটে বেরিয়ে পড়েছেন মানুষের ডাকে। এই সমাজের মানুষকে তিনি বড় আপনজন মনে করতেন এবং ডাকে সারা দেওয়াটাকে মনে করতেন তাঁর জীবনের এক অন্যতম বড় কাজ। নিজের স্বার্থের চাইতে অপরের স্বার্থ এবং সমাজ ও দেশের স্বার্থকে তিনি সবসময় বড় করে দেখেছেন। কাউকে কথা দিয়ে কথা রক্ষা করা তাঁর স্বভাবের অন্যতম দিক। কথার বরখেলাপ যেন তাঁর জীবনের দুর্ঘটনার চেয়েও বড়। এরকম অনেক ঘটনা থেকে একটি হচ্ছে-রবীন্দ্রশ্রাদ্ধশত জন্মবার্ষিকীতে উৎসবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি আনিসুজ্জামান। কিন্তু সেদিন সকালে স্যারের ছোট মেয়ে শুচির স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে পৌঁছতে পৌঁছতে প্লেনেই মৃত্যুবরণ করেন। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। “এমন সময় ফোন, দেখি মামা নিজেই ফোন করেছেন। কোনমতে ফোন তুললাম। মামার অতি শান্ত কন্ঠস্বর। বন্যা খবর শুনেছিস তো? আমি আর কিছু বলতে পারছি না। মামা নিজে থেকে বললেন, ‘শোন, আজ তো আমি পুরো সময়টা থাকতে পারবো না। উদ্বোধন হয়ে গেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে যাব। শুচি আজ বিকালেই ফিরবে। আমাকে এয়ারপোর্টে থাকতে হবে। (সূত্রঃ আনিস মামা-রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। বইঃ আনিসুজ্জামান সম্মাননা গ্রন্থ)।
আনিসুজ্জামান স্যারের জীবনের অনেক স্মৃতি ও ঘটনার ঘনঘটা থেকে এই চট্টগ্রামের মাত্র গুটিকয়েক ঘটনার উল্লেখ করেছি মাত্র। সর্বশেষ আর একটি বিষয় উল্লেখ করে নিবন্ধনটি শেষ করতে চাই : আনিসুজ্জামানের জীবন ও কর্মের ওপর সর্বপ্রথম গবেষণায় মেতে ওঠেন তাও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই বাংলা বিভাগের তরুণ গবেষক বন্ধু মালিক সোবহান (মোঃ আবদুল মালেক)। তার গবেষণা নির্দেশকও ছিলেন স্যারের আর এক মেধাবী ছাত্র (এম.এতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম) এবং সম্ভবত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর শেষ ছাত্র গোষ্ঠীর মধ্যে একজন (এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান) কথাসাহিত্যিক প্রফেসর ড. মহীবুল আজিজ (বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন)। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- বন্ধু মালিক সোবহান তার পিএইচডি অভিস্যন্দ ভর্তি জমা দেওয়ার মাসখানেক আগেই হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তার এই গবেষণা কমিটি কঙবাজার সাহিত্য একাডেমি থেকে “আনিসুজ্জামানঃ জীবন ও কর্ম” শিরোনামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় মার্চ ২০১১ সালে। উল্লেখ্য তরুণ গবেষক মালিক সোবহানের এই গ্রন্থ আনিসুজ্জামানের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে প্রথম গ্রন্থই বটে। মালিকের অকাল মৃত্যুতে স্যার খুবই দুঃখ পেয়েছিলেন। অন্যদিকে তার গবেষণা গ্রন্থটি স্যারকে আনন্দও দিয়েছিলেন। এ সবই চট্টগ্রামকেই বেষ্টন করে ঘটনাক্রমে আবর্তিত।
আজকের প্রজন্ম আনিসুজ্জামানের জীবন ও কর্মকে গভীর মনোযোগ সহকারে পাঠকরাও অনুধাবন করা প্রয়োজন। আমাদের জীবনের প্রয়োজনে একজন আনিসুজ্জামানের সমগ্র জীবনাদর্শকে লালন-পালন ও ধারণ করা প্রয়োজন। কারণ এই অবক্ষয়ীনীতি সমাজে অপরিপূর্ণ মানুষের ভিড়ে তিনি এক পরিপূর্ণ মানুষ। যে কোনভাবেই আনিসুজ্জামানের স্পর্শে আসলেই মানুষ আলোকিত হয়। ক্লাসে গিয়ে পাঠ নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আর সে কারণেই আনিসুজ্জামান সকলের শিক্ষক না হয়েও সকলেরই আনিসস্যার। (সংক্ষেপিত)

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅমীমাংসিত
পরবর্তী নিবন্ধঅঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পিত স্যাটেলাইট টাউন গড়ে তুলতে হবে