স্বামী ও সতীন মিলে গৃহবধূ ফারজানা আক্তার বুলুকে (২৭) খুন করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তার আগে প্রতিবেশীরা স্বামী শরীফ মিয়া ও সতীন রিনা আক্তারকে আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গতকাল সতীন রিনা আক্তারের দেয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে হত্যার কারণ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পুরোটাই। এর আগে গত শুক্রবার রাতে বাটালি হিলের ইসলাম কলোনির একটি ঘর থেকে ফারজানা আক্তার বুলুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ফারজানার বড় ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। সরেজমিনে ফারজানা আক্তার বুলুর প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভালোবেসে চার বছর আগে সিএনজি টেঙি চালক শরীফ মিয়াকে বিয়ে করেছিলেন ফারজানা। বছরখানেক আগে শরীফ তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিনাকে নিয়ে ওয়্যারলেস কলোনি এলাকায় আলাদা বাসা ভাড়া করেন। কিন্তু এ মাসের মাঝামাঝিতে রিনাকে ইসলাম কলোনির বাসায় নিয়ে এলে ফারজানার সঙ্গে তাদের ঝগড়া শুরু হয়। এ বিরোধেই ঘটে খুনের ঘটনা।
বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার পরিত্রাণ তালুকদার আজাদীকে বলেন, প্রথমে ফারজানা আত্মহত্যা করেছে বলে তারা প্রচারণা চালায়। কিন্তু প্রতিবেশিরা তা আমলে নেয়নি। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশেরও সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে তাদের দুজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিনা আক্তার তা স্বীকারও করেন।
সহকারী কমিশনার জানান, গতকাল বিকেলে মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রিনা আক্তার। তিনি বলেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে তারা দুজন শ্বাসরোধ করে ফারজানাকে খুন করেছেন। স্বীকারোক্তি না দেয়ায় ফারজানার স্বামী শরীফ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে শরীফ ও রিনা মিলে শ্বাসরোধ করে ফারজানাকে খুন করে। এরপর লাশের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সেটি রান্নাঘরের চালের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। রাত ১০টার দিকে এ ঘটনার পর নিজেদের পরিকল্পনা মতো রিনা ঘুমানোর ভান করে। শরীফ বাইরে চা খেতে যায়। ঘণ্টাখানেক পর বাসায় রিনা চিৎকার শুরু করে। বাইরে থাকা শরীফও ফিরে এসে লাশ নিয়ে টানাটানি করে। মূলত আত্মহত্যা বলে চালাতেই তারা এসব অভিনয় করে। কিন্তু প্রতিবেশীরা তাদের বিশ্বাস করেনি।