নিজের ভোট দিতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ১১৫ বছরের বৃদ্ধা হজরুন নেছা। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললেন, খুব খুশি লাগছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিটি কর্পোরেশনের যতগুলো ভোট হয়েছে সবগুলো দিয়েছি। অনেক বয়স হয়েছে। আগামীবার বাঁচবো কি না জানি না। তাই এবার ভোট দিতে চলে আসলাম।
১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসেফ আমবাগান টেকনিক্যাল স্কুল ভোট কেন্দ্রে গতকাল দুুপুর ১২টায় কথা হয় হজরুন নেছার সাথে। এ সময় তিনি ভোট দেয়ার অনুভূতি প্রকাশ করেন আজাদীর কাছে।
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন হজরুন নেছা। লাঠিতে ভর করে ধীর পায়ে হেঁটে আসেন কেন্দ্রে। অবশ্য নাতি মহিউদ্দিন শক্ত করে ধরে রেখেছেন তাকে। কেন্দ্রে প্রবেশ করতেই তাকে দেখে এগিয়ে যান প্রিসাইডিং অফিসার মনিরুল ইসলাম। কুশল বিনিময় করে নিজে পৌঁছে দেন নির্দিষ্ট বুথে।
ভোট দেয়া শেষে যখন তিনি বের হচ্ছিলেন তখন কেন্দ্রে প্রবেশ করেন সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এম মোস্তাক আহমেদ। বৃদ্ধার হাত ধরে কিছু পথ এগিয়ে দেন তিনি। পাশে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলেন। হজরুন নেছা যখন ভোট দিতে আসেন তার কয়েক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন একজন। তখনো বাইরে চলছে উত্তেজনা। তাই হজরুন নেছার কাছে প্রশ্ন ছিল, গণ্ডগোলের মধ্যেও ভোট দিতে আসছেন, ভয় লাগছে না? উত্তরে বললেন, কিসের ভয়। আমার ভোট দিতে আসছি। ভোট দিতে পেরেছেন নাকি অন্য কেউ দিয়েছে? জানতে চাইলে পাশে দাঁড়ানো নাতি মহিউদ্দিন বললেন, নানী নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন। এতে সম্মতি জানান হজরুন নেছা। কথা প্রসঙ্গে জানালেন, আমবাগান বাস্তুহারা কলোনিতে থাকেন তিনি। তার দুই মেয়ে, দুই ছেলে। এক ছেলে মারা গেছেন। তিনি থাকেন মেয়ের কাছে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিচয়পত্রে হজরুন নেছার জন্ম তারিখ দেয়া আছে ১৯১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। ওই হিসেবে তার বয়স ১০৮ বছর পেরিয়েছে। তবে তার নাতি মহিউদ্দিন বললেন, জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় সচেতনতার অভাবে বয়স সাত বছর কম দেয়া হয়েছিল। ওই হিসেবে হজরুন নেছার বয়স ১১৫ বছর চলছে।