নিজের ভোট দিতে পেরে সন্তুুষ্টি প্রকাশ করেছেন ১১৫ বছরের বৃদ্ধা হজরুন নেছা। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললেন, ‘খুব খুশি লাগছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিটি কর্পোরেশনের যতগুলো ভোট হয়েছে সবগুলো দিয়েছি। অনেক বয়স হয়েছে। আগামীবার বাঁচবো কী না জানি না। তাই এবার ভোট দিতে চলে আসলাম।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসেফ আমবাগান টেকনিক্যাল স্কুল ভোট কেন্দ্রে বুধবার (২৭ জানুয়রি) দুপুর ১২ টায় কথা হয় হজরুন নেছা’র সাথে। এসময় ভোট দেয়ার অনুভূতি প্রকাশ করেন দৈনিক আজাদীর কাছে।
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন হজরুন নেছা। লাঠিতে ভর করে ধীর পায়ে হেঁটে আসেন কেন্দ্রে। অবশ্য নাতি মহিউদ্দিন এসময় শক্ত করে ধরে রাখেন তাকে। কেন্দ্রে প্রবেশ করতেই বৃদ্ধাকে দেখে এগিয়ে আসেন প্রিজাইডিং অফিসার মনিরুল ইসলাম। কুশল বিনিময় করে নিজে পৌঁছে দেন নির্দিষ্ট বুথে।
ভোট দেয়া শেষে যখন তিনি বের হচ্ছিলেন তখন কেন্দ্রে প্রবেশ করেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এম মোস্তাক আহমেদ। বৃদ্ধার হাত ধরে কিছু পথ এগিয়ে দেন তিনি। পাশে দাঁড়িয়ে ছবিও তুললেন।
হজরুন নেছা যখন ভোট দিতে আসেন তার কয়েক ঘন্টা আগে কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন একজন। তখনো বাইরে চলছে উত্তেজনা। তাই হজরুন নেছার কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘গন্ডগোলোর মধ্যেও ভোট দিতে আসছেন, ভয় লাগছে না’? উত্তরে বললেন, ‘কিসের ভয়। আমার ভোট দিতে আসছি।’
ভোট দিতে পেরেছেন নাকি অন্য কেউ দিয়েছে? এমন প্রশ্নে পাশে দাঁড়ানো নাতি মহিউদ্দিন বললেন, ‘নানী নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন।’ এতে সম্মতি জানান হজরুন নেছা।
কথা প্রসঙ্গে জানালেন, আমবাগান বাস্তুহারা কলোনিতে থাকেন তিনি। তার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। ইতোমধ্যে এক ছেলে মারা গেছেন। তিনি থাকেন মেয়ের কাছে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিচয়পত্রে হজরুন নেছার জন্ম তারিখ দেয়া আছে ১৯১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। ওই হিসেবে তার বয়স ১০৮ বছর পেরিয়েছে। তবে তার নাতি মহিউদ্দিন বললেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় সচেতনতার অভাবে বয়স সাত বছর কমিয়ে দেয়া হয়েছিল। ওই হিসেবে নানীর বয়স ১১৫ বছর।’