চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ঘিরে সৃষ্ট সংঘাতের ঘটনায় নগরের কোতোয়ালী, আকবর শাহ ও বাকলিয়া থানায় গতকাল পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দেড়শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪০ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা অজ্ঞাতনামা। এজহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতে বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনের নূর আহম্মদ সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় ২১ নং জামাল খান ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমনের সমর্থকদের সাথে বিএনপি সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরে বিএনপি সমর্থকরা রাবেয়া রহমান গলির মুখে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ করেন শৈবাল দাশ সুমন। এসময় বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে জানিয়েছে বিএনপি।
এ ঘটনায় গতকাল নগর ছাত্রলীগের সদস্য মো. মোশরাফুল হক চৌধুরী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে নগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খানসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে রাবেয়া রহমান গলির মুখে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ২১নং জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিথুন বড়ুয়া। বক্তব্যে তিনি নৌকা প্রতীকের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এতে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাশেম বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান বরকত, জাহাঙ্গীর আলম, সৈয়দুল আলম, মৃদুল কুমার দাশ, বাবুল দেব রায়, আহসান উল্লাহ খোকন, মোহাম্মদ ইসমাইল, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন, আসহাব রসুল জাহেদ, মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আনজুমান আরা, হুমায়ন কবীর মাসুদ, ফরহাদুল ইসলাম মিন্টু, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
গত বুধবার পাহাড়তলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের সময় জোর করে সেখানে ঢুকে হামলার অভিযোগে কলেজের অফিস সহকারী বাপ্পু কুমার দাশ বাদী হয়ে ৮১ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। আকবর শাহ থানার ওসি জহির
হোসেন জানান, মামলার পর পুলিশ এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে একইদিন বিকালে বাকলিয়া থানার বলিরহাটে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের পক্ষে যুবদলের নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। প্রচারণার একপর্যায়ে যুবদলের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে কয়েকজনকে আহত করেছে অভিযোগ এনে বাকলিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, ইমাম হোসেন সাগর নামে এক ব্যক্তি বাদি হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী ইয়াছিন চৌধুরী আছুর ছেলে সানাউল্লাহ সানিসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে একজনসহ মোট চার জনকে গ্রেপ্তাার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন এজাহারভুক্ত এবং বাকি দুজন পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।