খালি কন্টেনারের তীব্র সংকট

বেসরকারি আইসিডিতে কমে গেছে এক তৃতীয়াংশ, নেতিবাচক প্রভাব রপ্তানিতে

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২১ at ৫:০১ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে খালি কন্টেনারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিভিন্ন দেশে কন্টেনার জটসহ নানা কারণে সংকট ক্রমে তীব্র হচ্ছে। খালি কন্টেনার সংকটের মাঝে রপ্তানিকারকদের বাড়তি ভাড়া দিয়ে পণ্য পাঠাতে হচ্ছে। এদিকে খালি কন্টেনারের অভাবে বেসরকারি আইসিডিও সংকট মোকাবেলা করছে।
সূত্র জানায়, পণ্য পরিবহনে সুবিধা এবং পণ্যের মান ও নিরাপত্তার জন্য কন্টেনারের কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাল-ডালের মতো পণ্যও বর্তমানে কন্টেনারে বোঝাই করে আমদানি হয়। আমদানি করা হয় গাড়ির মতো পণ্যও। আমদানিকৃত পণ্য খালাসের পর খালি কন্টেনারগুলো সংশ্লিষ্ট আইসিডিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আইসিডি থেকে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে ওই কন্টেনার পুনরায় বিদেশে পাঠানো হয়। এভাবে একটি সার্কেলের মাঝে ঘুরতে থাকে মেইন লাইন অপারেটরের (এমএলও) মালিকানাধীন কন্টেনারগুলো।
সূত্র বলেছে, বিশ্বে আড়াইশ’র মতো এমএলও রয়েছে। এরমধ্যে পঞ্চাশটিরও বেশি কোম্পানির বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য রয়েছে। যাদের লাখ লাখ কন্টেনার বিশ্বের নানা দেশের বন্দরে বা আইসিডিতে থাকে। যেগুলোতে পণ্য বোঝাই করে ওই এমএলও’র জাহাজে পরিবহন করতে দেয়া হয়। বাংলাদেশের শতভাগ রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করে বেসরকারি ১৬টি আইসিডি। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্যও হ্যান্ডলিং করে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞে আইসিডিগুলোতে গড়ে ৪৫ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেনার জমা থাকে। যেগুলোতে শতভাগ রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে বিদেশে পাঠানো হয়।
রপ্তানিকারকরা নিজস্ব পছন্দের এমএলও’র কন্টেনার নিয়ে থাকেন। এতে জাহাজের ভাড়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকের পছন্দের ক্ষেত্রটি বিস্তৃত থাকে। কিন্তু খালি কন্টেনারের সংখ্যা কমে গেলে আমদানিকারকের পছন্দ এবং ভাড়া নিয়ে সুবিধা পাওয়ার সুযোগটি সংকোচিত হয়ে যায়। বেশ কিছুদিন যাবত দেশে খালি কন্টেনারের সংকট বিরাজ করছে। বর্তমানে তা চরম আকার ধারণ করেছে। চট্টগ্রামের ১৬টি আইসিডিতে গড়ে ৪৫ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেনার থাকলেও গতকাল তা ৩০ হাজার টিইইউএস এর নিচে নেমে আসে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ব্যবসা রয়েছে এমন ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট যেমন সিংগাপুর, কলম্বো ও পোর্ট কেলাং এ ভয়াবহ কন্টেনার জট বিরাজ করছে। এতে চট্টগ্রামে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার আসার পরিমাণ কমে গেছে। দুই মাস আগে চট্টগ্রামে পৌঁছার কথা, এমন পণ্যের চালানও মালয়েশিয়া কিংবা সিংগাপুরে আটকা পড়েছে।
অপরদিকে কিছু কিছু রুটে পণ্য পরিবহনে ভাড়া বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাড়তি ভাড়ার জন্য ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন রুটে কন্টেনার পণ্য পরিবহন বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারা অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ার রুটগুলোতে পণ্য পরিবহন কমিয়ে দিয়েছে। এতে আমদানি পণ্য নিয়ে চট্টগ্রামে কন্টেনার আসার পরিমাণ কমে যায়। খালি কন্টেনার সংকটে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে রপ্তানি বাণিজ্যে।
বেসরকারি আইসিডিগুলোর সংগঠন বিকডার সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার খালি কন্টেনারের তীব্র সংকটের কথা স্বীকার করে বলেছেন, পরিস্থিতি ক্রমে নাজুক হচ্ছে। আমাদের ইয়ার্ডগুলোতে খালি কন্টেনারের সংখ্যা কমে গেছে। তিনি বলেন, বেসরকারি আইসিডিগুলো খালি কন্টেনার নিয়ে নতুন সংকটে পড়েছে। ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টগুলোতে জট না কমলে এর সুরাহা হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধতিন থানায় মামলা বিএনপির দেড়শ’ নেতাকর্মী আসামি