আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব। পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে শুধুমাত্র মানবের জন্য আর মানবকে সৃষ্টি করা হয়েছে তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করার জন্য। সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার পরেও আমরা ভুলবশত অনেক ভুল করে থাকি তাই প্রবাদে আছে ‘মানুষ মাত্রই ভুল’। এই ভুল কখনো অকারণে আবার কখনো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ইচ্ছাকৃত ভুল করেন অনেকেই।
উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভুল মারাত্মক অপরাধের শামিল, ভুল স্বীকার না করা মানে নিজেকেই মিথ্যার মধ্যে ডুবিয়ে রাখা। আমি ভুলবশত অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনকিছু ভুল করেছি কিন্তু স্বীকার করলাম না, একটি ভুলের সাথে নতুন আরও একটি মিথ্যা সংযুক্ত করলাম- তার অর্থ আমি দুটি পাপ করেছি, একটি অন্যটির সাথে ইচ্ছাকৃত সংযুক্ত করলাম বা করেছি, যা আমি আমার সাথেই মিথ্যা বললাম।
ভুল স্বীকার না করা একধরনের ব্যাধি, আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এ রোগের সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ যা প্রতিটি ধর্মশাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে গুরুত্ব সহকারে।
যে ভুল বা মিথ্যা আমরা রীতিমতো স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত করেছি তার মাধ্যমে বড় মিথ্যা বা ভুলের সৃষ্টি করছি সহজেই। বিশেষকরে আমরা ছোট-বড় সকলেই ফোনে স্বাভাবিকভাবে মিথ্যা কথা প্রায়ই বলি, এইতো আমি চলে আসছি! হ্যাঁ, আমি কাছাকাছি! আর একটু অপেক্ষা কর চলে আসছি প্রায়! অথচ আপনি বাসা থেকে বেরই হননি। সঠিক তথ্য না দিয়ে বা মিথ্যা কথা বলে অপেক্ষায় রাখছি একেবারেই স্বাভাবিকভাবে।
এই ছোট ছোট ভুল থেকেই বড় ভুলের জন্ম দিচ্ছি আপনি-আমি নিজেই, অজান্তেই ক্ষতি করছি নিজের। যাকে বলা যায় নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা। অপ্রিয় হলেও সত্য কথা হচ্ছে, আমরা প্রতিনিয়ত নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারছি আর পাপের বোঝাটা বড় করছি। পাপ বাপকেও ছাড়ে না। যদি তাই হয়! তা হলে আমরা কেন, কী কারণে মিথ্যা বলছি? একবার একান্তে বসে ভাবুনতো! কী করছি নিজের সাথে।
সত্য বলাকে অভ্যস্থতায় রূপ দেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। মিথ্যা বলার সংস্কৃতি একই সাথে তিলে তিলে পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট। মনে রাখতে হবে আপনার চালচলন, আচার ব্যবহার, দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনবোধ প্রজন্মকে দারুণভাবে প্রভাবিত করছে। এসব উত্তরাধিকার সূত্রেই লালন করতে থাকবে আপনার প্রাণপ্রিয় সন্তান কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সুতরাং সাবধান, আপনি সন্তানদের সামনে, ছোটদের সামনে মিথ্যা কিংবা অন্য কোন নেতিবাচক কার্যকলাপ করবেন তো তা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসবেই।