নগরীর আকবর শাহ থানাধীন ফিরোজশাহ কলোনি ১ নং ঝিল এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ১৮ মামলার আসামি নুরে আলম প্রকাশ নুরুকে গ্রেপ্তারে থানা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালানোর শেষ দিকে পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেয় নুরু নিজেই। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এক পর্যায়ে নুরু ও তার সহযোগীরা পালাতে বাধ্য হলেও আজম নামে তার প্রধান সহযোগী ধরা পড়ে। পরে তাকে নিয়ে নূরুর আস্তানায় অভিযান চালিয়ে চারটি চাপাতি ও একটি ধামা উদ্ধার করে পুলিশ। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।
আকবর শাহ থানার ওসি জহির হোসেন আজাদীকে বলেন, নুরু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সব সময় আকবর শাহ থানাধীন বিভিন্ন পাহাড়ে আত্মগোপন করে থাকে। আজ (শনিবার) বিকেল ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আকবর শাহ থানা পুলিশ ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানের শেষ পর্যায়ে অন্য একটি পাহাড় থেকে হঠাৎ করে নুরু ও তার লোকজন হামলা চালায় পুলিশের ওপর। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় আজমকে গ্রেপ্তার করা হলেও নুরুসহ অন্যরা পালিয়ে যায়।
সরেজমিনে এলাকাবাসী ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, আকবরশাহ থানাধীন ফিরোজশাহ কলোনি ১ নং ঝিল এলাকার ধনু মিয়া ভাণ্ডারীর দুই ছেলের মধ্যে বড়ো নুরে আলম নুরু, দ্বিতীয় জানে আলম, মেয়ে রুবি বেগম ও মেয়ের জামাই আবুল কাসেম আলমগীর। তারা প্রত্যেকে অপরাধের সাথে জড়িত। কুমিল্লা থেকে এসে ১ নং ঝিল এলাকায় বসত গড়ার পর থেকে পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এ পরিবার। এরপর থেকে ধনু মিয়ার ছেলে নুরে আলম নুরু মাদক, অস্ত্র কারবার, চুরি, ডাকাতি, লুটপাট, পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে, গড়ে তুলে অপরাধের সাম্রাজ্য।
ওসি জহির বলেন, নুরু এলাকার চিহ্নিত মাদক ও অস্ত্রের কারবারি, চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় মাদক ও অস্ত্র কারবার, চুরি, ডাকাতি, লুটপাট, পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অপরাধে আকবরশাহ থানা ও খুলশী থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে। সে আকবরশাহ থানায় সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত ১ নং আসামি, পুলিশ, র্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে।
তিনি বলেন, নুরে আলমের ছোট ভাই জানে আলম বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর, ছিনতাই, মাদক ব্যাবসা, অস্ত্র চালান, পাহাড় কাটা, লুটপাট, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কাজে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধেও ১০ থেকে ১২টি মামলা হয়েছে। আকবরশাহ থানায় ৩ নং সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত আসামি জানে আলম। নুরে আলম নুরু ও জানে আলমের ভগ্নিপতি রুবি বেগমের স্বামী আবুল কাসেম আলমগীর ২০০৯ সালের ১০ জুন নারী নির্যাতন, ঘরবাড়িতে হামলা, লুটপাটের, অভিযোগে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের হয়। ২০১৬ সালের ১৩ জুন বসতঘরে অগ্নিসংযোগের মামলা দায়ের হয় আকবরশাহ থানায়। এই মামলায় তার শ্যালক জানে আলম ১ নং, নুরে আলম নুরু ২ নং এবং আলমগীর ৩ নং আসামি।
এর প্রতিশোধ নিতে তৎকালীন আকবরশাহ থানার ওসি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলা করে এই পরিবারটি। চাঁদা না পেয়ে আলমগীরকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
তৎকালীন ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, রুবি বেগম নিজে দুই মামলার আসামি; এসব মামলায় সে পলাতক।