ভারত থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় দেশটির ঋণ সহায়তার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারছে না চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। অথচ দেড় বছর আগে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়ছিল। ‘মর্ডানাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্স এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ শীর্ষক প্রকল্পটির আওতায় নগরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪১০ কিলোমিটার সড়কে এলইডি বাতি স্থাপন করার কথা।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ‘টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ এবং ভারতের ‘এনার্জি ইফিসিয়েন্সি সার্ভিস লিমিটেড (ইইসিএল)’ এর সঙ্গে ২০১৭ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতেই প্রকল্পটি গ্রহণ করে চসিক। ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকায় প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে এলওসি-৩ (লাইন অব ক্রেডিট) এর আওতায় ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ অর্থের যোগান দিবে ভারত। ঋণ হিসেবে দেয়া এ অর্থের পরিমাণ ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। অবশিষ্ট ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার টাকা দিবে বাংলাদেশ সরকার। এদিকে গত ২১ জুন প্রকল্পটির বিষয়ে ভারতের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটির বিষয়ে কোয়ারি চাওয়া হয়। ২ জুলাই চসিক এর জবাব দেয়। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট ভারতীয় নমনীয় ঋণ (১ম, ২য়, ৩য় এলওসি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়াল এ সভায় বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুত এলইডি লাইট স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়। ওই সভায় একমাসের মধ্যে অনুমোদন পত্র পাঠানো হবে বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে ভারত। তবে গতকাল পর্যন্ত অনুমোদন পায়নি চসিক। ফলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ দৈনিক আজাদীকে বলেন, যে সব কোয়ারি চাওয়া হয়েছিল তার উত্তর পাঠিয়েছি। ভারত থেকে প্রি-কেয়ালিফাইড ঠিকাদারের তালিকা এবং টেন্ডারের গাইড লাইনসহ চূড়ান্ত অনুমোদন আসবে। সেটি আসলেই কাজ শুরু করতে পারব। আশা করছি জানুযারিতে অনুমোদন পাব।
এদিকে প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাবনা সূূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৯ জুলাই একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছিল প্রকল্পটি। পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবর প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন (জিও) দেয় পরিকল্পনা বিভাগ। প্রকল্পের আওতায় শহরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪০, ৬০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি, ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল এবং ৫০৭টি কন্ট্রোল সুইচ বক্স বসানো হবে। পাঁচ মিটারের বেশি প্রশস্ত সড়কগুলোতে এসব বাতি লাগানো হবে। এছাড়া হাইড্রোলিক বীম লিফটার ও ইলেকট্রিক্যাল ইক্যুপমেন্ট সংগ্রহ করা হবে। ডিপিপিতে প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে করোনাপরিস্থিতির কারণে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।