মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। প্রকল্পটির বিদেশী পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে আজ বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নির্ধারণে আলোচনা করা হবে। প্রকল্পটির বিষয়ে আজ চট্টগ্রামের গণমাধ্যমকর্মীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং দেয়া হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ‘মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ নামের এই প্রকল্পটির ব্যাপারে দেশের প্রত্যাশা অনেক। কাগজপত্রে এটিকে গভীর সমুদ্রবন্দর বলা না হলেও কার্যতঃ এটিই দেশের গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ১৪ মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো যায় এমন বন্দরকেই গভীর সমুদ্রবন্দর বলা হয়। এই বন্দরে ১৪ মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ অনায়াসে ভিড়ানো যাবে। সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাপানের নিপ্পন কোয়ে এবং দেশীয় ডিডিসি নামের একটি যৌথ কোম্পানিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত ১ নভেম্বর জাইকার অনুমোদন পাওয়ার পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আজ প্রথম তারা বন্দর ভবনে বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকে বসছে। প্রকল্পের যাবতীয় ডিজাইন, ব্যয় নির্ধারিণ, টেন্ডার ডকুমেন্টস তৈরি এবং অবকাঠামোগত নির্মাণ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিয়োগের পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কার্যক্রমও মনিটরিং এবং তদারকি করবে। পরবর্তীতে ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ থেকে শুরু করে বন্দর চালু করে দেয়ার বিষয়টিও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানই সমন্বয় করবে। বন্দর চালু হওয়ার এক বছর পর পর্যন্ত এই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাপোর্ট দিয়ে যাবে। ২৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান উপরোক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
‘মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ এর প্রকল্প পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্ল্যানিং এন্ড এডমিন) মোহাম্মদ জাফর আলম গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, আজ বন্দর ভবনে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে বৈঠক হবে। বৈঠকের পর প্রকল্পটির বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। তিনি সরকারের ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত এই প্রকল্পটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে জাইকার ঋণ (প্রকল্প সাহায্য) ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সরকারি তহবিল থেকে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার যোগান দেবে। ২০২২ সালের জুন থেকেই বন্দর নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে। আগামী ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।