বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চাহিদার অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা আমদানি খরচের চেয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। চাইলেই পণ্যটি গুদামজাত করে রাখা যায় না। মিয়ানমার থেকে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে আসা পর্যন্ত খরচ পড়ছে প্রায় ৭০ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া পাকিস্তানি পেঁয়াজ প্রতি কেজি খরচ পড়েছে ৫২ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। চীনা পেঁয়াজের প্রতি কেজি আমদানি খরচ পড়েছে ৪৫ টাকা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের শেষ দিকে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা কমাতে দেশের কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপ পেঁয়াজ আনার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত আনেনি। সেই সময় ছোট ও মাঝারি আমদানিকারকরাও পেঁয়াজ আমদানিতে উৎসাহী ছিলেন না। ফলে বাজারে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় দুই দফায় পেঁয়াজের কেজি ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়ে যায়। এবার সংকট মোকাবেলায় শুরু থেকে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানিতে উৎসাহী ছিলেন। এক সাথে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজার চাহিদা কমে যায়। ফলে আমদানি খরচের চেয়েও কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
জানা গেছে, ভারত গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র থেকে মিয়ানমার, তুরস্ক, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়াসহ ১২টি দেশ থেকে আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) সংগ্রহ করে। গতকাল পর্যন্ত আমদানিকারকরা ৪৪৬ আইপিতে পেঁয়াজ আনার অনুমতি নিয়েছেন এক লাখ ৯৮ হাজার ৫৫৪ টন। এছাড়া ৩৩০টি আইপিতে ছাড়পত্রের অনুমতি নিয়েছেন ২১ হাজার ৩২১ টন। চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ১৩৮টি প্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৭৫০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছেন। আরো কিছু চালান আসার পথে রয়েছে।
চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল আজাদীকে বলেন, আমদানিকারকরা এখনো নিয়মিত আইপি নিতে আবেদন করছেন। তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে আমরা ছাড়পত্র ইস্যু করছি। সংকট মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও পেঁয়াজের চালান খালাসে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস আজাদীকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতির দিকে রয়েছে। প্রতিটা ব্যবসায়ী এখন লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।