বাংলাদেশে আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায় অন্যতম পথিকৃৎ আবদুল হক চৌধুরী। চট্টগ্রাম, সিলেট ও আরাকানের ইতিহাস নিয়ে তাঁর দীর্ঘ গবেষণার ফসল ইতিহাস বিষয়ক কিছু গ্রন্থমালা রচনা করে তিনি হয়ে উঠেছেন ইতিহাসের বরপুত্র।
আবদুল হক চৌধুরীর জন্ম ১৯২২ সালের ২৪শে আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নওয়াজিশপুর গ্রামে। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষা ছিল না। কিন্তু ইতিহাস চর্চায় গভীর অধ্যয়ন, গবেষকের নিষ্ঠা, সামাজিক-নৃতাত্ত্বিক ও লোকসংস্কৃতিক তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতা প্রভৃতির প্রয়োগ ঘটিয়ে তিনি একজন যথার্থ ইতিহাসবিদে পরিণত হন। ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ে আবদুল হক চৌধুরী রচিত মোট এগারোটি গ্রন্থ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : ‘চট্টগ্রামের ইতিহাস প্রসঙ্গ’, ‘চট্টগ্রামের সমাজ ও সংস্কৃতির রূপরেখা’, ‘চট্টগ্রাম-আরাকান’, ‘প্রাচীন আরাকান রোহাইঙ্গা, হিন্দু ও বড়ুয়া বৌদ্ধ অধিবাসী’ প্রভৃতি। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তিনি বহু প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আবদুল হক রাউজান অঞ্চলে সাংগঠনিক ভূমিকা পালন করেন। চট্টগ্রামের ইতিহাস গবেষণার জন্য তাঁকে ‘চট্টলতত্ত্ববিদ’ উপাধি দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালের ২৬ অক্টোবর আবদুল হক চৌধুরী প্রয়াত হন।