সাতকানিয়ায় মোটরসাইকেল চোরের রডের আঘাতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম শফিকুল ইসলাম মিয়া (৪০)। একই ঘটনায় আরো দুই জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার বাইতুল ইজ্জতল আমতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা সেলবরষ এলাকার মৃত আবদুল হাফেজের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম সবুজ সাতকানিয়ার বাইতুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের পূর্ব পার্শ্বে হরিণতোয়া রাস্তার মাথা এলাকায় বসবাস করেন।
ঘটনার দিন ভোরে তার ঘর থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়। মোটরসাইকেল চুরির বিষয়টি বুঝতে পেরে জাহাঙ্গীর আলম সবুজ তাৎক্ষণিকভাবে তার এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে অপর একটি মোটরসাইকেলযোগে কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক দিয়ে কেরানীহাটের দিকে রওনা দেন।
সড়কের বাইতুল ইজ্জত আমতল এলাকায় আসার পর মোটরসাইকেলসহ চোরকে আটক করেন। তখন সবুজ আমতল এলাকায় বসবাসরত তার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম মিয়াকে ফোন করে ডেকে আনেন। পরে তারা কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কে দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল চোরের সাথে কথা বলছিলেন। এরই মধ্যে মোটরসাইকেল চোরের আরো কয়েকজন সহযোগী অপর একটি মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে এসে তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাতে করে একটি মোটরসাইকেলসহ চোরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এসময় চোরের রডের আঘাতে মাথায় আঘাত পেয়ে শফিকুল ইসলাম মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে কেরানীহাট আশশেফা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই ঘটনায় তার ভাই ও মোটরসাইকেলের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম সবুজ (৩৭) এবং আবু তৈয়ব (৩৩) আহত হয়।
নিহতের ছোট ভাই ও চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম সবুজ জানান, ঘর থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি দ্রুত আমার বন্ধু তৈয়বকে সাথে নিয়ে অপর একটি মোটরসাইকেলযোগে কেরানীহাটের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কের বাইতুল ইজ্জত আমতল এলাকায় দেখি এক চোর আমার চুরি হওয়া মোটরসাইকেলটি স্টার্ট করার জন্য বারবার চেষ্টা করছে।
ওই সময় মূলত মোটরসাইকেলটিতে তেল ছিল না। তখন আমরা তাকে আটক করি। পরে আমতল এলাকায় থাকা আমার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম মিয়াকে ফোন করি। তিনি এসে চোরের সাথে কথা বলছিলেন। এসময় চোরের আরো কয়েকজন সহযোগী এসে আমাদেরকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। এতে আমার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম মিয়া ঘটনাস্থলে মারা যান। তিনি আরো জানান, আমাদেরকে আঘাত করার পর চোরেরা প্রথমে চুরিকৃত মোটরসাইকেলটি ফেলে যায় এবং আমরা যে মোটরসাইকেলযোগে এসেছিলাম সেটি নিয়ে যায়।
সাতকানিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, মোটরসাইকেল চোরের রডের আঘাতে তিনি মারা গেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ শুরু করেছে পুলিশ।