বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় নগরীতে বখাটে যুবকের ছুরিকাঘাতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ১৫ বছরের এক কিশোরি। পুলিশ বখাটে সেই যুবক রাসেলকে গ্রেপ্তার করেছে। শুধু গ্রেপ্তার নয়, কিশোরিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি, রক্ত দেয়া এবং নিত্য খোঁজ রাখছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। বাকলিয়ার শান্তিনগর বগারবিল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ওসি মো. নেজামউদ্দিন আজাদীকে বলেন, ওই কিশোরি দেওয়ানবাজার দিদার মার্কেট এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে। কিশোরির সঙ্গে রাসেলের প্রেম ছিল। পরে পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাতে সম্মতি দেয় কিশোরির পরিবার। কিন্তু রাসেলের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে সে বখাটে ও ছিনতাইকারী। তার বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় রয়েছে একটি অস্ত্র মামলাও। এসব জেনে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কিশোরির পরিবার। আর এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওই কিশোরিকে স্পর্শকাতর স্থানে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে রাসেল।
ওসি নেজাম বলেন, ছুরিকাঘাতে মেয়েটির ফুসফুসের নালী ছিঁড়ে গেছে। তার নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। পুলিশ জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী পথে ওই কিশোরিকে আটকে ছুরিকাঘাত করে রাসেল। প্রচুর রক্তক্ষরণে মুমূর্ষু কিশোরি পড়ে ছিল রাস্তায়। পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ওই কিশোরিকে উদ্ধার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ। পুলিশ সদস্যরাই ওই কিশোরিকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং তাকে বাঁচাতে পাঁচ ব্যাগ রক্ত দেন। ওই কিশোরি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৪নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। টানা দুদিন পর মেয়েটির জ্ঞান ফিরেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাকলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমির হোসেন বলেন, অভিযুক্ত রাসেলকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাকে যে ছুরি সরবরাহ করেছে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাসেল শরিয়তপুর গোসাইরহাটের দক্ষিণ চর কুমারিয়ার মো. বাবুলের ছেলে। বর্তমানে থাকে বাকলিয়ার শান্তিনগর বগারবিল এলাকার রশিদ মাঝির কলোনিতে।
ভুক্তভোগী কিশোরির বাবা বলেন, গত ৬ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে গার্মেন্টস ছুটি হওয়ার পর বাকলিয়া শান্তিনগর বগারবিল এলাকার হারুন কলোনির পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার ওপর পৌঁছা মাত্র সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা রাসেল ছুরি নিয়ে আমার মেয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরনের ওড়না ধরে টান মারে। এরপর তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। বুকের বামপাশে এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে রক্তে ভিজে যায় পাকা রাস্তা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনার একপর্যায়ে ওই কিশোরি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়ে। পথচারিরা এ ঘটনা দেখে ৯৯৯ নম্বরে বিষয়টি জানায়। পরে বাকলিয়া থানা পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার মেয়ের চিকিৎসার তদারকি করছে পুলিশ। তারা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছে। ঘটনার দিন পুলিশ যদি আমার মেয়েকে তাৎক্ষণিক রক্ত না দিত তাহলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত না।
তিনি বলেন, আমার পরিবারের দুরবস্থা দেখে মেয়ের চিকিৎসার জন্য ওসি নেজাম উদ্দিন ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে তিনি সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।