চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দেশি ও মিয়ানমারের পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার পরেও দাম বেড়েই চলেছে। গতকাল দেশি ও মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা করে বেড়েছে। আরেক দফা পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আরও চাপে পড়ে গেল মধ্যবিত্তরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন দেশের পেঁয়াজ এসেছে। বন্দর থেকে খালাসকৃত পেঁয়াজ ইতোমধ্যে বিভিন্ন বাজারে প্রবেশ করেছে। এছাড়া বাজারে রয়েছে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ। পেঁয়াজের আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের পার্থক্য রয়েছে। তাই প্রশাসনের উচিত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা। গতকাল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই দিনের ব্যবধানে মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে গিয়ে ৮৫ টাকায়।
এদিকে চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের (প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন স্টেশন) উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল দৈনিক আজাদীকে জানান, গতকাল পর্যন্ত এক হাজার ৯০ টন পেঁয়াজ আমদানির ছাড়পত্র নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ৩৬৬ আইপির বিপরীতে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৬৭ হাজার ৭৬৭ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছেন ৮০ জন ব্যবসায়ী। চীন, মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডসহ মোট ১২টি দেশ থেকে এসব পেঁয়াজ আনা হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। আজ (গতকাল) সারা দিনে মাত্র ৮ ট্রাক পেঁয়াজ এসেছে। অথচ আগে একসময় নূন্যতম ২০-২৫ ট্রাক পেঁয়াজ আসতো। মিশর, তুরস্কের পেঁয়াজ খুব শিগগিরই আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব পেঁয়াজ বাজারে আসলে আশা করি দাম কমে যাবে।
অন্যদিকে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্রেতাদের সাশ্রয়ী মূল্যে পেঁয়াজ সরবরাহের উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) দেশব্যাপী ট্রাক সেলের পাশাপাশি ই-কমার্সের মাধ্যমেও পেঁয়াজ বিক্রি করছে। এতে ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে প্রতি কেজি ৩০ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির পরিধি আরও বাড়ানো হচ্ছে। চাহিদা মোতাবেক বাজারে পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ দেশব্যাপী স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্বে বাজার অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার পেঁয়াজ আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। আমদানিকারকদের চাহিদা মোতাবেক সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ, পরিবহনসহ সকল ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাবে। পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। পেঁয়াজের অবৈধ মজুত বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে সরকার প্রচলিত আইনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।