সারাদেশে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। ৬-৫৯ মাস বয়সী ১৩ লাখের বেশি শিশুকে খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চট্টগ্রামেও এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন হয়েছে গতকাল। ক্যাম্পেইনের আওতায় আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে।
এদিকে, গতকাল সকালে নগরীর মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাইয়ে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন। চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোজাম্মেল হক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মাঝে মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. নাছিম ভূইয়া, কনসালটেন্ট ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন তালুকদার, ইউনিসেফের চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান নিউট্রিশন কর্মকর্তা ডা. উবা সুই চৌধুরী, মো. নেছার উদ্দিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, জেলা পর্যায়ে সীতাকুণ্ড আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সীমিত পরিসরে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। এসময় সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নুর উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ১৩ লাখেরও বেশি শিশুদের মাঝে ৬-১১ মাস বয়সীদের একটি করে নীল রঙের (১ লাখ ইউনিট) এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের (২ লাখ ইউনিটের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন) ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তবে জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল না খাওয়াতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
এছাড়াও ছয় মাসের কম বয়সী ও ৫ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুকেও এই ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী- ২ সপ্তাহব্যাপী (৪ থেকে ১৭ অক্টোবর) এ ক্যাম্পেইনে মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় মোট ১৩ লাখ ১৮ হাজার ২৩৩ শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল। এর মধ্যে জেলার ১৪টি উপজেলায় মোট ৭ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৩ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মাঝে ৬-১১ মাস বয়সী ৮৮ হাজার ৭১৩ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৫২০ জন শিশুকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর মহানগরের ৪১টি ওয়ার্ডে মোট ৫ লাখ ৩১ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৮১ হাজার এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী সাড়ে চার লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সবমিলিয়ে মহানগর ও জেলায় ১৩ লাখের বেশি শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার ৪ হাজার ৮০০টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্নকরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সবধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। এবারের ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে জেলার ১৫ উপজেলায় পর্যবেক্ষণ করতে ১০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে জরুরি পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে মনিটরিংয়ের লক্ষ্যে ৫ সদস্যের মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।