মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তাঁকে মেরিল্যান্ডে ওলটার রিড হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা বলছেন, সতর্কতা হিসেবে প্রেসিডেন্টকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার মেরিন ওয়ানে হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণ থেকে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে করোনা আক্রান্ত ট্রাম্প ওলটার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে প্রথম রাত পার করেছেন। এই হাসপাতালেই তাঁর করোনা সংক্রমণের চিকিৎসা চলছে। তাঁর চিকিৎসক জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে অক্সিজেন দেওয়া লাগবে না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা প্রেসিডেন্টের ফুসফুসের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে রেমডিসিভির ওষুধ দিয়ে তাঁর চিকিৎসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরই মধ্যে ট্রাম্পকে ওষুধের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক শন কনলি। খবর বিডিনিউজ ও বিবিসি বাংলার।
বিবিসি জানিয়েছে, হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে আনার আগে ট্রাম্প কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দুর্বল করার আশায় পরীক্ষামূলকভাবে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ গ্রহণ করেছিলেন। ওই ওষুধটি শরীরে ভাইরাসের বিস্তার হ্রাস করে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সহায়তা করে বলে জানিয়েছিলেন ডা. কনলি। এছাড়া সুস্থ রাখতে ট্রাম্পকে জিংক, ভিটামিন ডি, ফেমটিডিন, মেলাটনিন এবং অ্যাসপিরিন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ৭৪ বছর বয়সী ট্রাম্প ওজনাধিক্য বা স্থূলতায় ভুগছেন। বয়স ও অতিরিক্ত ওজনের কারণে তার রোগ লক্ষণ গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার বয়স ৫০ বছর। তার শরীরেও মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে বলে জানান ডা. কনলি। তিনি বলেন, ফার্স্ট লেডির হাল্কা কাশি এবং মাথাব্যথা হচ্ছে। ট্রাম্প-মেলানিয়া দম্পতির একমাত্র ছেলে ব্যারন তাদের সঙ্গেই হোয়াইট হাউজে থাকে। ব্যারনের পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ এসেছে।
একাধিক গবেষণায় রেমডিসিভির ব্যবহারে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের উন্নতি হওয়ার প্রমাণ পাওয়ার পর এ বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসায় রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমতি দেয়। রেমডিসিভিরসহ আরো কয়েক রকম ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হলেও এখন পর্যন্ত এ রোগের নিশ্চিত কোনো ওষুধ বা চিকিৎসা ব্যবস্থা আবিষ্কার হয়নি।
সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্পের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হাল্কা জ্বর। হাসপাতালে এক রাত পার হলেও ট্রাম্প এখনও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের দায়িত্বে বহাল আছেন। আগামী কয়েকদিন তিনি হাসপাতাল থেকেই দায়িত্ব সামলাবেন বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব কেইলি ম্যাকএন্যানি। ট্রাম্পের ছেলে এরিক তার বাবার জন্য প্রার্থনা করতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট অসুস্থতার কারণে কাজ না করতে পারলে তিনি তাঁর দায়িত্ব ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে ন্যস্ত করতে পারেন। অর্থাৎ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সাময়িকভাবে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হবেন।