এমন কোনো দিন নেই যে সংবাদ মাধ্যমে কোনো সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের খবর থাকে না। সড়কে এরকম প্রাণহানি মর্মান্তিক অনাকাঙ্ক্ষিত। সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ পালন করতে দেখা যায়। এতদসত্ত্বেও সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে বলা হয় গত আগস্টে ৩৮৮ দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে সব পরিবার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রিয়জনকে হারায় তারাই জানে স্বজন হারানোর বেদনা কত নির্মম কতটা কঠিন। দুর্ঘটনার কারণে কত পরিবার নিস্ব ও অসহায় হয়ে পড়ে তার খবর কে রাখে। আমাদের দেশে যতগুলো সমস্যা বিদ্যমান তার মধ্যে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। দিনের পর দিন যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে সে তুলনায় তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা অপ্রতুল। বেপরোয়া গাড়ি চালকদের অপরিণামদর্শী খাম খেয়ালীতে প্রতিদিন ১৫/২০টি মানুষের জীবন রাজপথে ঝরে যাচ্ছে। পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য। বাংলাদেশের মতো এত বেশি সড়ক দুর্ঘটনা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে হয় বলে মনে হয় না। মূলত দায়িত্বশীল মহলের দায়িত্বহীন আচরণের কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা এবং গণ পরিবহণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সড়কে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির হার প্রতি বছরই বাড়ছে। যেভাবেই হিসেব করা হোক একটি স্বপ্নময় জীবন এবং পঙ্গুত্ব নিয়ে স্বপ্ন ভঙ্গের মূল্য আর্থিক ক্ষতির মানদণ্ডে নিরূপণ করা সম্ভব নয়। গণ মাধ্যমের সুবাদে নাগরিক সমাজে তোলপাড় সৃষ্টি করা এসব ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু লোক দেখানো তদন্ত ও ঘোষণা শুনা যায়। কখনো–কখনো আদালতের পক্ষে থেকেও নির্দেশনা জারি করা হয়। এই পর্যন্তই। বছরে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ হরণ, হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়ী চালক–মালিকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।
এম. এ. গফুর, বলুয়ার দীঘির দক্ষিণ–পশ্চিম পাড়, কোরবানীগঞ্জ, চট্টগ্রাম।