প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে গতিশীলতার তাগিদ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। অবশ্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২১ সাালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ অনেক বেশি দৃশ্যমান হবে। গত বর্ষায় সুফল যা মিলেছে সামনের দিনগুলোতে সুফল আরো বাড়বে বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর দামপাড়ায় সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড দফতরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করেন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এসময় চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদও চসিক প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।
বৈঠকে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, নগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েছেন সেনাবাহিনীকে। এতে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়েছে। সেনবাহিনী ত্বরিৎ গতিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৪৯.৬৬ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এবার নগরীতে সেভাবে জলজট হয়নি। জোয়ারে পানি উঠলেও ভাটার সময় নেমে গেছে দ্রুত। প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ৩০ শতাংশ ব্যয় হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমার পরামর্শ হচ্ছে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি যেন যথেষ্ট দৃশ্যমান হয় এবং কাজ করতে গিয়ে যাতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়। ইতোমধ্যে যতটুকু অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়েছে, তাতে নগরবাসী সন্তুষ্ট।
চট্টগ্রাম নগরীর পানি যেসব খাল দিয়ে প্রবাহিত হয় সেগুলো খনন কাজে আরও গতি আনার জন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করেন চসিক প্রশাসক। একইসঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি। বৈঠকে প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছর জুন মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের বড় অংশ দৃশ্যমান হবে। প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়নের পর জলাবদ্ধতার সমস্যা আর থাকবে না। বৈঠকে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রাম শহরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এজন্য তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। চট্টগ্রাম শহর জলাবদ্ধতামুক্ত হলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বপ্ন পূরণ হবে।
বৈঠকে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী, লে. কর্নেল সরকার ইকবাল, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে কাজ করা বেশ কঠিন ছিল। অসংখ্য বহুতল ভবন ভাঙতে হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে খাল উদ্ধার করতে হয়েছে। আগামী বর্ষায় এই প্রকল্পের সুফল অনেক বেশি পাওয়া যাবে বলে তারা মন্তব্য করেন।