চেয়ারে বসে মনোনয়নপত্র জমা নিয়েছেন। ছবি তোলার সময়ও দাঁড়াননি। মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় আমার সাথে থাকা প্রস্তাবকারী এবং সমর্থনকারীকেও দাঁড়াতে দেননি। শুধু আমি দাঁড়িয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। তিনি দাঁড়াতে আগ্রহী নন। আগে কখনও এরকম দেখিনি।
গতকাল বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসারের হাতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে নামার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী কথাগুলো বলছিলেন।
জানা যায়, গতকাল লোহাগাড়া সদর, আমিরাবাদ ও আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল।
চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
লোহাগাড়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত (সংযুক্ত) বাঁশখালী নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আলম প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেন।
তিনি চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র গ্রহণ, প্রার্থীদেরকে রিসিভ কপি প্রদান এবং ছবি তোলার কাজ সারেন।
শুধু তিনি দাঁড়াননি এমন নয়, প্রার্থীর সাথে আসা প্রস্তাবকারী এবং সমর্থনকারীকেও মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় দাঁড়াতে দেননি।
প্রার্থী একা দাঁড়ানো, রিটার্নিং অফিসারসহ উপস্থিত অন্যরা বসা। এভাবেই সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা নেন। এতে কিছু কিছু প্রার্থী মন খারাপ করেছেন।
শুধু প্রার্থীরা নয়, প্রার্থীর সাথে আসা অনেকে বিষয়টিকে অপমানজনক বলে মনে করেছেন।
তবে প্রার্থী এবং তাদের সাথে আসা লোকজনের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ রিটার্নিং অফিসার মো. ফয়সাল আলম।
তিনি বলেন, “এটি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে প্রধানমন্ত্রীও প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় দাঁড়িয়ে থেকে দেন। আর রিটার্নিং অফিসার বসা অবস্থায় মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন।
এটা হলো গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। এখানে মনোনয়নপত্র জমা নেয়ার সময় কাউকে সম্মান বা অসম্মান করে আমি তা করিনি। গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ এভাবে গ্রহন করেছি।
আর কারো প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সাথে দাঁড়ানো এবং বসার সম্পর্ক নাই। বসে থেকেও যথাযথ সম্মান দেখানো যায়। আমি তাই করেছি।”
লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, তিনি চেয়ারে বসে থেকে মনোনয়নপত্র জমা নিয়েছেন। ছবি তোলার সময়ও দাঁড়াননি। প্রার্থীর সাথে থাকা প্রস্তাবকারী এবং সমর্থনকারীকে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীর পাশে দাঁড়াতে দেননি। এটা অশোভনীয়। এছাড়া তিনি প্রার্থী এবং উপস্থিত লোকজনের সাথে কথাও সুন্দরভাবে বলেননি। এটা খুবই দুঃখজনক।
লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুচ্ছফা চৌধুরী জানান, উনি বলেছেন এটা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা। আর উনাকে তো আমি দাঁড়াতে বলতে পারি না।
লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাব উদ্দিন চৌধুরী জানান, রিটার্নিং অফিসার প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র জমা নিয়েছেন বসে থেকে। এমনকি ছবি তোলার সময়ও দাঁড়াননি। দাঁড়িয়ে নিলে একটু সুন্দর হতো।