৬ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ : চট্টগ্রামে মাদ্রাসা শিক্ষকের আমৃত্যু কারাদণ্ড

| বৃহস্পতিবার , ৫ জুন, ২০২৫ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

ছয় শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রামের এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত আসামি ৪১ বছর বয়সী নাজিম উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির পূর্ব ধুরং বাবুগঞ্জে, তার বাবার নাম গোলামুর রহমান। আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

নাজিম উদ্দিন ওই ঘটনার সময় নগরীর পাঁচলাইশে মক্কা হোটেলের পাশের গলির রহমানিয়া তাহফিজুল কোরআন একাডেমির পরিচালক ও শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯() ধারায় ছয় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামি নাজিম উদ্দিনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার সময় আসামি নাজিম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি তদন্তকালীন সময়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নাজিম উদ্দিন রহমানিয়া তাহফিজুল কোরআন একাডেমি মাদ্রাসার দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময় মাদ্রাসার ছয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন।

২০২১ সালের ৪ মার্চ ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীর যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তদন্ত করে। তদন্তে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার কয়েকজন শিশুকে নিপীড়নের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে ওইদিনই ওই মাদ্রাসার ১১ বছর বয়সী এক ছাত্রের বড় ভাই বাদী হয়ে ছয় ছাত্রের পক্ষে মামলাটি করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১৫ অগাস্টের রাতে ভুক্তভোগী ১১ বছর বয়সী শিশুটিকে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন নাজিম উদ্দিন। পরে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর মাদ্রাসার ১৬ বছর বয়সী আরেক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে নাজিম। তার আগে ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ১২ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে এবং ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ১৩ বছর বয়সী আরেক ছাত্রকে ধর্ষণ করেন তিনি। এছাড়া ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে এবং ওই বছরের ১৮ মে আরো দুই ছাত্র তিনি যৌন নিপীড়ন করেন। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের বাবামায়ের কাছে ধর্ষণের বিষয়ে মুখ না খোলে এজন্য তাদেরকে ভয়ভীতি এবং মারধর করত নাজিম উদ্দিন।

এ মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করা হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামি পক্ষে দুইজন সাফাই সাক্ষ্যও দেন। পরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এদিন আদালত এই রায় ঘোষণা করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিবি পরিচয়ে প্রতারণা চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধপ্লাস্টিক দূষণ আর নয়