৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, দুজন খালাস

টেকনাফে শিশু আলো হত্যা

টেকনাফ প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১২ মে, ২০২২ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

টেকনাফে চাঞ্চল্যকর শিশু আলী উল্লাহ আলো (৭) হত্যা মামলায় ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। মামলার আরও দুই আসামির বিরুদ্ধে প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টা ৪০মিনিটের দিকে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ প্রায় ১ ঘণ্টা রায় পড়ে শোনানোর পর ৬ আসামির বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন তিনি।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মো. সুমন মিয়া, নজরুল ইসলাম, সৈয়দুল আমিন প্রকাশ লম্বাইয়া, ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান, মো. ইয়াকুব, মো. ইছহাক কালু। এর মধ্যে ইয়াছিন, ইয়াকুব ও ইছহাক কালু রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। মামলার বাকি দুই আসামি মহিব উল্লাহ ও মো. দিদার মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেন আদালত। তাদের মধ্যে দিদার মিয়া রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার বাদী মো. আবদুল্লাহও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদার বিল এলাকার রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও ফারজানা পারভীন সুইটির ৭ বছরের ছেলে মো. আলী উল্লাহ আলোকে অপহরণ করা হয়। আবদুল্লাহর কর্মচারী সুমন আলোকে পাখির বাসা দেখানোর কথা বলে বাড়ির সামনের কাচারি ঘরে নিয়ে যায়। কাচারি ঘরের সিলিংয়ে তুলে তার হাত পা বেঁধে মুখে জোর করে স্কচ টেপ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় আলো চিৎকার করলে আসামিরা তাকে সিলিংয়ের ওপরই গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় আলোর বাবা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় আসামি মো. ইয়াকুব, ইয়াছিন প্রকাশ রায়হান, মো. সুমন মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্র পক্ষের প্রধান কৌশলী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, এ রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অপরাধ যেই করুক শাস্তি তাকে পেতেই হবে। এ রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় বলে জানান মামলার বাদী আলোর বাবা আবদুল্লাহ। তিনি যারা খালাস পেয়েছেন তারাও ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা বলেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী সেলিম উদ্দীন রাজু বলেন, আমরা এ রায়ে অসন্তুষ্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আমির হোসেন, অ্যাডভোকেট দীলিপ দাশ ও অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসমীক্ষা ফি চূড়ান্ত হলেই কাজ শুরু করবে বুয়েট
পরবর্তী নিবন্ধবন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে সাগরে ডুবে কিশোরের মৃত্যু