কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে এবার রেকর্ড তিন কোটি টাকার বেশি পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম জানান, শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খুলে তারা এই হিসাব পান। তিনি বলেন, দিনব্যাপী গণনা শেষে মোট তিন কোটি সাত লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গেছে, যা আগের চেয়ে বেশি। টাকা ছাড়াও দানসিন্দুকে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। তাছাড়া মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার আর্তি জানিয়ে লেখা বেশ কয়েকটি চিঠি এসেছে।
টাকা গণনায় মসজিদ ও মাদরাসার শতাধিক ছাত্র-শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১০ জন আনসার সদস্য, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও মসজিদের সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।-বিডিনিউজ
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদের এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তা করা হয়। পাশাপাশি গরিব ছাত্রদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক জানান, দানবাক্সের টাকায় আন্তর্জাতিকমানসম্পন্ন আধুনিক স্থাপত্যকলার মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দিন ভুইয়াঁ জানান, এর আগে সর্বশেষ গত ১৯ জুন দানসিন্দুক খোলা হয়। তখন দুই কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তখন খোলা হয়েছিল ৪ মাস ২৬ দিন পর। এবার ৪ মাস ১৭ দিন পর খোলা হয়েছে।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জে অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গাজুড়ে রয়েছে। মসজিদ কমপ্লেক্সের অধীনে আছে মাদ্রাসা ও এতিমখানা।
কথিত আছে, ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।