কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। প্রকৃতির অপূর্ব সুন্দর এ উপজেলায় যারা মগনামা ঘাট হয়ে সেখানে যাতায়াত করেন তাদের দিতে হয় তিনবার টোল কিংবা পারাপারের টাকা। প্রথমে ঘাটে দিতে হয় জনপ্রতি পাঁচ টাকা করে। এরপর বোটে করে গেলে জনপ্রতি ৪০ টাকা দিতে হয়। সেখানে নানা ধরনের পণ্যভর্তি থাকায় বসার কিংবা অনেক সময় দাঁড়ানোর কোনো সুযোগও থাকে না। আবার স্পিডবোটে করে পারাপারে জনপ্রতি ১২০ টাকা করে দিতে হয়। এরপর কুতুবদিয়া প্রান্তে বড়ঘোপ ঘাটে তৃতীয়বারের মত দিতে হয় আরও পাঁচ টাকা। এভাবে নৌকা পারাপারে নানা ভোগান্তিতে রয়েছেন যাত্রীরা। এসব জনভোগান্তি লাগবে সর্বস্তরের জনগণ এখানে সরকারিভাবে ফেরী চলাচলের দাবি জানান।
প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটে করে পেকুয়ার মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেল পার হয়ে কুতুবদিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করছে। অভিযোগ রয়েছে, একটি চক্র নানাভাবে ডেনিস বোটের (ছোট নৌকা) কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অধিকাংশ লোকজনকে স্পিডবোটে পারাপারে বাধ্য করে। এসব বোটে নেই কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম। শীত মৌসুমে সাগর শান্ত থাকলে পারাপারে তেমন কোনো ভোগান্তি না পড়লেও বর্ষা কিংবা ঝড়ো বাতাসের সময় স্পিডবোটযোগে পারাপারে সীমাহীন ভোগান্তি ও ঝুঁকি থাকে। মাত্র তিন কিলোমিটারের এ নৌ পথটিতে পারাপার হওয়া যেমন কষ্টের তেমনি বাড়ছে খরচও। তাই এ ঘাটে ফেরি সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছেন দ্বীপ উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ। যুগের পর যুগ ধরে এই নৌপথে ফেরি চালুর দাবি জানানো হলেও তাদের কথার কোনো মূল্যায়ন হয়নি।
ইজারাদারের বোটে পারাপারকারী যাত্রী কামাল উদ্দিন, মোরশেদ ও সেলিম বলেন, সরকার সারাদেশে আধুনিক উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে অথচ দ্বীপবাসীর জন্য এখানে কী একটা ফেরীর ব্যবস্থাও করতে পারবে না? উপকূলের বেড়িবাঁধ কোথাও একদম নেই, কোথাও ভাঙা। কুতুবদিয়ার জনগণের স্বার্থে সরকারকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা বলেন, চারদিকে সমুদ্রে ঘেরা এ উপজেলার উৎপাদিত পণ্য দ্রুত পরিবহনের অভাবে প্রতিবছর আর্থিকসহ বিবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। চট্টগ্রাম, চকরিয়া ও কঙবাজার থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য বড়ঘোপ–মগনামা নৌ রুটের নদীতে ফেরি সার্ভিস চালুর দাবি এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের।
এদিকে মহেশখালী–কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বিগত দিনে অন্তত দুয়েকটি ফেরী কঙবাজার–মহেশখালী ও পেকুয়ার মগনামা–কুতুবদিয়া রুটে ফেরির চালুর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। কুতুবদিয়া–মগনামা ঘাটে তিনবার টাকা নেওয়া, ইজারাদারের যাত্রীবাহী বোটে অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন, স্পিডবোটে ১২০ টাকার অতিরিক্ত ভাড়া রোধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকার সাধারণ জনগণ।